• ঢাকা, বাংলাদেশ সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না ঢাবি ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে-ড. আসাদুজ্জামান রিপন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে রাজশাহীতে জমজমাট মেস ব্যবসা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা সোমবার থেকেই খুলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ মধ্যরাতে অথবা কাল ভোরে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেয়া হবে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো বিএনপি খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে চায় বিএনপি; সরকারের অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাবে কাতার রাজশাহীতে কাপড়ের দোকানে আগুন, ১৫-২০ লাখ টাকার ক্ষতি

কভিড-১৯ রোগ থেকে মুক্তি পেলেও আক্রান্তদের শরীরে নতুন রোগ

Reporter Name / ১৭২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩

কভিড-১৯ রোগ থেকে মুক্তি পেলেও আক্রান্ত রোগীদের শরীরে বাসা বাঁধছে নতুন রোগ। আক্রান্ত হওয়ার দীর্ঘ সময় পার হলেও শরীর-মনে স্পষ্ট হচ্ছে করোনার ক্ষত। অনেক রোগীর ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অনেকের ফুসফুসে পানি জমেছে। অনেক রোগী করোনার থাবা থেকে পেয়েছেন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, চর্মরোগ, স্নায়ুরোগ, মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথার মতো নতুন যন্ত্রণা। অনিদ্রা, স্মৃতিভ্রংশ, দুর্বলতা, মানসিক অবসাদও ডেকে এনেছে করোনা।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনা-পরবর্তী রোগীদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় যাদের বেশি অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে, আইসিইউতে যেতে হয়, তারা সুস্থ হওয়ার পর এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। আগে না থাকলেও করোনা-পরবর্তীতে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস দেখা দিয়েছে এমন রোগীও পেয়েছি আমরা। করোনা-পরবর্তীতে দুর্বলতা কিংবা অন্য সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো খাবার ও ওষুধ সেবন করতে হবে।’

রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক মাহমুদা খানম গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ১ মাস ২০ দিন পর করোনা থেকে মুক্তি মিললে তিনি   বাসায় যান। কিন্তু এরপরও তীব্র কাশি ও শ্বাসকষ্ট তার পিছু ছাড়ছিল না। তিনি বলেন, ‘কাশি ও শ্বাসকষ্ট থাকায় আবার চিকিৎসকের কাছে যাই। টেস্ট শেষে দেখা যায় ফুসফুসে পানি জমেছে এবং নিউমোনিয়া দেখা দিয়েছে। এ জন্য আবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। আগে আমার কোনো রোগই ছিল না। কিন্তু এখন শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের দুয়ারে ঘুরতে হচ্ছে। তিন বেলা নিয়ম করে ওষুধ খেতে হয়। চিকিৎসক বলেছেন এগুলো সবই করোনা-পরবর্তী প্রভাব।’ এ ব্যাপারে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ মানুষের শরীরেও হৃদরোগের বিভিন্ন অনুষঙ্গ দেখা দিচ্ছে। করোনা নেগেটিভ হলেও অনেক সময় অন্য সমস্যার কারণে অবস্থার অবনতি ঘটছে রোগীর। করোনা আক্রান্ত হলে শরীরে প্রদাহ হয়। এতে হার্টের পাম্পিং কমে যায়। হার্টের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ায় অনেক রোগীর ফুসফুসে পানি আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হার্টের কার্যকারিতা অনেকটা শ্যালো মেশিনের মতো। করোনা রোগীদের নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে। নয়তো অগোচরে শরীরে বাসা বাঁধবে দুরারোগ্য ব্যাধি। রোগীদের মনোবল হারানো যাবে না।’ দুই বছর আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী করোনা আক্রান্ত ২০২১ সালের জুনে। আমার স্ত্রী ২১ দিনে এবং আমি ২৫ দিনে করোনামুক্ত হই। করোনা নেগেটিভ আসার পর থেকে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আমার ঘনঘন পেটে সমস্যা হচ্ছে। হজমে সমস্যা হচ্ছে প্রায়ই। আমার স্ত্রীর শরীর অ্যালার্জিতে ভরে গেছে। শরীরে লাল ফোসকা উঠেছে। টানা ওষুধ চললেও কাজ হচ্ছে না। ইনজেকশন দিতে হচ্ছে। চিকিৎসক এটাকে পোস্ট কভিড সিনড্রম বলছেন।’ চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা নেগেটিভ হওয়ার পর মাঝে মধ্যে অনেকের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা বা সামান্য পরিশ্রমে হাঁপিয়ে উঠতে পারেন। বিশেষ করে, যারা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থেকেছেন, তাদের শ্বাসক্রিয়া স্বাভাবিক হতে বেশ সময় লেগে যাচ্ছে। অবসাদ আর ক্লান্তি থেকে যায় দীর্ঘদিন। হাসপাতালের বিছানায় দীর্ঘদিন শুয়ে থাকার কারণে দেহের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। খাবারে অরুচিও থেকে যায় বেশ কিছুদিন। এমনকি খাবার গিলতে, চিবুতে সমস্যা হতে পারে। যারা আইসিইউতে ছিলেন বা গলায় টিউব দেওয়া হয়েছিল, তাদের এই সমস্যা বেশি হয়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর অনেক রোগীর মানসিক বিপর্যস্ততা দেখা দেয়। অনেকে বিভিন্ন স্নায়ুরোগে ভুগছেন। মনোযোগ ও চিন্তাশক্তির সমস্যা, স্মৃতি হারানো, বিষণ্নতার মতো সমস্যা হতে পারে। প্রিভেনটিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘কভিডের পর কিছু রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে যাকে আমরা পোস্ট কভিড বলছি।

এর মধ্যে অবসাদ বা ক্লান্তি থেকে শুরু করে নানা সমস্যা রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, কভিড আক্রান্ত হওয়ার কারণে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়ার ওপর ঝড় বয়ে যায়। এ কারণে পরবর্তী সময় নানারকম উপসর্গ দেখা যায়। কভিড আক্রান্তরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও তার চিকিৎসা শেষ হয়ে যায় না। তাকে নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।