রাজশাহীর বাগমারায় চাঞ্চল্যকর স্ত্রী হত্যা মামলার পলাতক আসামী ঘাতক স্বামী রুবেল হোসেন’কে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আটক করেছে র‍্যাব।

রাজশাহীর বাগমারায় চাঞ্চল্যকর স্ত্রী হত্যা মামলার পলাতক আসামী ঘাতক স্বামী রুবেল হোসেন’কে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আটক করেছে র‍্যাব।
১। র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারী, ধর্ষণকারী, খুনি, প্রতারক ও হ্যাকারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
২। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ রাত্রী-২৩.০০ ঘটিকায় রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানাধীন মাসকাটাদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামস্থ এলাকায় অপারেশন পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর স্ত্রী হত্যা মামলার মূলহোতা পলাতক আসামী ১। মোঃ রুবেল হোসেন (২৮), পিতা-মৃত ওসমান আলী, সাং-বাগমারা, ইউপি-গনিপুর, থানা-বাগমারা, জেলা-রাজশাহী’কে গ্রেফতার করে।
৩। আটককৃত রুবেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পেশায় একজন রডমিস্ত্রী। রুবেল আরো জানায় যে, সে প্রায় ০৭ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে ভিকটিম ঝর্ণা আক্তার লিপি (২৫)’কে বিয়ে করে। তাদের সংসার জীবনে ০১ টি ছেলে সন্তান রয়েছে। আসামী রুবেল একজন মাদকাসক্ত। তার গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্যুরো বাংলাদেশ এনজিও হতে বিভিন্ন অংকের ঋণ নেয়া ছিল বিধায় হতাশাগ্রস্থ ছিল। যার প্রেক্ষিতে বিবাহের পর হতে সংসারের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই আসামী তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। এছাড়াও আসামী ভিকটিমকে অন্য কারও সাথে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করত যার ফলে সার্বক্ষণিক পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো এবং একপর্যায়ে তার স্ত্রীকে মারপিট করে বাড়ী হতে তাড়িয়ে দেয়। কয়েকদিন পরে আসামী রুবেল তার শ্বশুরবাড়ী গিয়ে শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের নিকট মাফ চেয়ে বলে, “আর কখনো মারপিট করবো না, একটি বারের মত আমাকে সুযোগ দিন, আমি ভাল হয়ে যাব।” আসামীর কথামত সরল বিশ্বাসে পুনরায় ভিকটিমকে তার বাড়ীতে নিয়ে আসে। গত ২৮/০১/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান-২১.৩০ ঘটিকায় আসামী ও ভিকটিম শয়ন কক্ষে শুয়ে পড়ে। ইং-২৯/০১/২০২৪ তারিখ রাত্রী-০৪.৩০ ঘটিকার দিকে আসামী তার মা ও বোনকে অন্য একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে আটকে রেখে লোহার ধারালো শাবল দিয়ে ভিকটিমের গলা, বুক ও থুতনিতে গুরুতর আঘাত করে নৃশংসভাবে খুন করে সকলের অগোচরে আসামী অন্যত্র পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে রাজশাহী জেলার বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
৪। ভিকটিম একজন ধার্মিক ও পরহেজগার ছিল। সে পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়তো। এলাকার সবাই তাকে ভালো হিসেবে জানতো।
৫। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মত র‌্যাব তার ছায়া তদন্ত শুরু করে ও আসামী যেন কোন ভাবেই পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। র‌্যাবের গোয়েন্দা দল জানতে সক্ষম হয় যে, আসামী মোহনগঞ্জে কোন এক অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে ছিল এবং একপর্যায়ে সে পার্শ¦বর্তী দেশে পালিয়ে যাওয়ার জন্য মন স্থির করে। পরে তার ভগ্নীপতির সাহায্যে রাজশাহী মহানগরীতে বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে করে। পরবর্তীতে আসামী মোঃ রুবেল হোসেনকে ধরার জন্য র‌্যাব অভিযান পরিচালনা শুরু করে। ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ র‌্যাব-৫, সিপিএসসি এর অভিযানে রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানাধীন মাসকাটাদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামস্থ জনৈক দেলোয়ার হোসেন (৪৫), পিতা-মৃত আরমান আলী এর বসতবাড়ী হতে তাকে আটক করা হয়। উক্ত ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।