খুলনায় ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

খুলনায় ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষ, আহত শতাধিক

খুলনায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সংঘর্ষে বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ পণ্ড হয়েছে। সংঘর্ষে উভয় দলের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে নগরীর শহীদ হাদিস পার্ক ও কেডিঘোষ রোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে বিএনপি এ সমাবেশ আহ্বান করে।

বিকেল ৩টায় খুলনা কেডিঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ আয়োজন করে দলটি। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সমাবেশে যোগ দিতে ছাত্রদলের জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে পিকচার প্যালেস মোড় হয়ে দলীয় কার্যালয়ের দিকে আসতে থাকেন। একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মিছিল বের করেন মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা। মিছিলটি আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে আসতে থাকে।

পিকচার প্যালেস মোড়ে তাদের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রথম সংঘর্ষ হয়। সেখান থেকে ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা সদর থানার পাশে বিএনপির সমাবেশে হামলা করেন। ভাঙচুর করা হয় সমাবেশের চেয়ার ও প্যান্ডেল। আতংকিত হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে আশ্রয় নেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ অর্ধশতাধিক টিয়ারসেল ছোড়ে। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দিকে চলে যান। এরপর বিএনপির নেতকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বিএনপির মহানগর আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা  বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শুরু করি। সমাবেশে আসা মিছিলের ওপর প্রথম ছাত্রলীগ হামলা করে। পরে তাদের সঙ্গে পুলিশ একত্রিত হয়ে সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী আহত ও আটক হয়েছেন। গ্রেফতারের ভয়ে অনেকে এরই মধ্যে এলাকা ছাড়া হয়েছেন।’

এ ব্যাপারে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রঘোষিত সমাবেশ ছিল। সমাবেশ শেষ করে আমরা মিছিল বের করি। মিছিলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছিলেন। মিছিলটি পিকচার প্যালেস মোড় ক্রস করার সময় ছাত্রদল এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে আমাদের মিছিলে হামলা চালান। তারা প্রচুর পরিমাণে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে অনেককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ ছাত্রলীগের মিছিলে থাকা নগর যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুল রহমান পলাশ জানান, ছাত্রলীগের মিছিলটি পিকচার প্যালেস মোড়ে এলে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালান। ছাত্রলীগের মিছিল থেকে সেই হামলা প্রতিহত করা হয়। এ বিষয়ে জানতে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।