মহামারী আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু, মারা যাওয়া ৫৭ শতাংশই নারী

মহামারী আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু, মারা যাওয়া ৫৭ শতাংশই নারী

মহামারী আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। প্রতিদিনই ঘটছে মৃত্যু। তথ্য বিশ্লেষণে পুরুষরা আক্রান্ত বেশি হলেও মৃত্যুতে নারীর হার বেশি। দেখা গেছে, চলতি বছরের মোট মৃত্যুর ৫৭ শতাংশই নারী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুষ্টিহীনতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণেই নারীর মৃত্যু হার বেশি।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শেষ ২৪ ঘণ্টার তথ্যমতে, ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছে ১৬ জন, যার মধ্যে ৯ জনই ছিলেন নারী। এর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এস এম নাজিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পাবলিক অ্যাকাউন্ট ডিপার্টমেন্টের সহকারী পরিচালক কান্তা বিশ্বাস ও মেডিকেল ছাত্রী সৈয়দা সাদিয়া ইয়াসমিন রাইসাও রয়েছেন। নাজিয়া ও কান্তা আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪১৮ জন। এটি ২৩ বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত হওয়া রোগী। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ১৬২ জন। বাকি ১ হাজার ২৫৬ জন ঢাকার বাইরের। সর্বশেষ চব্বিশ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১৪ জন ও ঢাকার বাইরের ২ জন।

জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৭ হাজার ৬৮৮ জন। এর মধ্যে মারা যান ২০১ জন। এই জুলাইয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫৪ জন। আক্রান্তের মধ্যে ৬৪ শতাংশ পুরুষ। নারী ৩৬ শতাংশ। মারা যাওয়া রোগীর ১১৪ জন নারী, ৮৭ জন পুরুষ। নারীর মৃত্যু বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এ ছাড়া আমার মনে হয়, নারীরা দেরিতে হাসপাতালে আসছে। ডেঙ্গু শনাক্তেও দেরি হচ্ছে।

খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. খালেদা ইসলাম বলেন, পুষ্টির বিষয়ে নারীরা বেশ উদাসীন। এ ছাড়া রোগ হলেও চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না তারা।

বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর শয্যা
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে নিয়ে এক বৈঠক শেষে সব সরকারি হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য ১০০ থেকে ২০০ শয্যা বাড়াতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *