• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না দেশে পৌঁছেছে সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত ৬ সেনাসদস্যের মরদেহ একের পর এক মিছিল মানিক মিয়া এভিনিউয়ে রাজশাহীতে হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ডা. জুবাইদা প্রাপ্য সম্মান পেলে রাশিয়া আর কোনো যুদ্ধে জড়াবে না: পুতিন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ (শনিবার) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ওসমান হাদি মারা গেছেন ওসমান হাদিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় সাভারের রিসোর্টে, তিন ঘণ্টা চলে বৈঠক আইপিএলের পুরো আসরে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না মোস্তাফিজ হাদির স্বাস্থ্য স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষায়; ব্রেন সক্রিয় করতে প্রয়োজন অপারেশন

টানা ৩ মাস ধরে কমছে দেশের রপ্তানি

Reporter Name / ৪৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫

প্রিয়জন ডেস্কঃ টানা ৩ মাস ধরে কমছে দেশের রপ্তানি। আগস্ট, সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবরেও কমেছে সার্বিক রপ্তানি আয়, যা গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। এসময়, রপ্তানি কমেছে তৈরি পোশাকসহ উৎপাদনমুখী অন্যান্য খাতেও। অবকাঠামোগত দুর্বলতা, নিরাপত্তাহীনতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রপ্তানি পণ্য বৈচিত্রকরণ ও নতুন বাজার সম্প্রসারণে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎসের একটি রপ্তানি। টানা তিন মাস ধরে দেশের এ খাতের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে বাড়ছে অস্বস্তি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয় প্রায় ২৫ শতাংশ। তারপর থেকে প্রতি মাসে রপ্তানি কমেছে ধারাবাহিকভাবে। আগস্টে রপ্তানি হয়েছে ৩৯১ কোটি ৫০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ৩৬২ কোটি ৭৬ ও অক্টোবরে ৩৮২ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। এতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আগস্টে রপ্তানি কমেছে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে কমেছে ৪ দশমিক ৬১ ও ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গ্রাফিক্স

দেশের রপ্তানি খাতের প্রধান পণ্য তৈরি পোশাক, যা মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশেরও বেশি। চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসের পর থেকেই এ খাতে ধারাবাহিক পতন চলছে। গেলো অক্টোবরে পোশাক খাতে রপ্তানি ৩০২ কোটি ডলার। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে এর পরিমাণ ছিলো ৩১৭ ও ২৮৪ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ৬০ কোটি ডলার।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্যান্য দেশের আগ্রাসী রপ্তানির বিপরীতে বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে রপ্তানি খাতে। তাদের মতে, উত্তরণের জন্য উৎপাদন খরচ কমানো এবং প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।

মানেল ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশিদুল হাসান চাঁদ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে লাগামহীন বক্তব্য প্রেসে দেয়া আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকা, পাশাপাশি আমাদের রপ্তানি সহজীকরণ করা। কারণ বিদেশি ক্রেতারা কিন্তু বুঝতে পারছে না আমরা সঠিক সময়ে সঠিক পণ্যটা ডেলিভারি করতে পারবো কি না।

৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে বন্ধ হয়েছে রপ্তানিমুখী অনেক কারখানা। বিজিএমইএ-এর হিসাবে গত ১৪ মাসে শুধু পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে ৩৫৩টির মত। এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, সরকারের নীতিগত পরিবর্তন, এনবিআরে কর্মবিরতি ও বন্দরের

সক্ষমতার অভাবে বেড়েছে কারখানা বন্ধের হার। এছাড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতায় রপ্তানি আরও কমার শঙ্কা তার।

বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, বিভিন্ন সময় যে পলিসিগুলো হঠাৎ পাল্টানো হয় এটা অনেক ক্ষেত্রে এক্সেপ্ট করতে পারে না। কিছুদিন হলো এনবিআরের জটিলতা, কোর্টের ইনিফিশিয়েন্সি, বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। প্রতি নির্বাচনের সময়েই বায়ার ইচ্ছা করে কিছু অর্ডার কমিয়ে দেয়। কমিয়ে দেয় এ কারণে যে তারা কনসার্ন তাদের পণ্য ঠিকমতো ডেলিভারি হবে কি না।

এদিকে, ইপিবির তথ্য বলছে, গেল অক্টোবরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি কমেছে। বেড়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়াবিহীন জুতা ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজার ও পণ্য বৈচিত্র্য বাড়ানো না গেলে রপ্তানি সংকট আরও ঘনীভূত হবে।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, সাভারে যে লেদার সিটি আছে সেটার মান আরও কিভাবে উন্নত করা যায়, সেটার যে সেন্ট্রাল এমপ্লয়িট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সেটাকে আরও কার্যকর করতে হবে। এত খাবার আমরা তৈরি করি সেটার হালনাগাদ সার্টিফিকেশন যদি করতে পারি, মালয়েশিয়া এবং সৌদি আরবের সঙ্গে যদি একটা প্যাক্টে যেতে পারি তাহলে এ খাদ্যপণ্যগুলোই বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হতে পারে।

রপ্তানিতে প্রচলিত বাজার নির্ভরতা দিন দিন বেড়েই চলছে। চলতি অর্থবছরে প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ও যুক্তরাজ্যর মতো প্রচলিত বাজার থেকে শুধু পোশাক খাতে রপ্তানি আয় এসেছে ৮৩১ কোটি ডলার, বাকি দেশগুলো থেকে যার পরিমাণ ১৬৬ কোটি ডলার। বাজার সম্প্রসারণে সরকারকে আরও কৌশলী হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

ড. মাহফুজ কবীর বলেন, আমরা মনে করি সবাই আমাদের জন্য এগিয়ে আসবে। আশিয়ানের সাথে মুক্ত বাণিজ্য করা যায় কি না সেটা এখনই চিন্তা করা উচিত। আরসে নামে একটা রিজিওনাল ট্রেড এগ্রিমেন্ট রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমরা কিভাবে যুক্ত হতে পারি সেটাও দেখতে হবে। দক্ষিণ আমেরিকার বাজার বিশেষ করে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, পেরু এবং চিলি এ চারটা দেশ কিন্তু বড় অর্থনীতি। সেখানে আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে।

অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, ভারত, সৌদি আরব, মেক্সিকো, ব্রাজিলের মতো অপ্রচলিত বাজারে বিশেষ গুরুত্ব দিলে রপ্তানি আয়ে কিছুটা গতি বাড়বে বলে মতামত অর্থনীতিবিদদের।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।