• ঢাকা, বাংলাদেশ রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না ঢাবি ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে-ড. আসাদুজ্জামান রিপন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে রাজশাহীতে জমজমাট মেস ব্যবসা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা সোমবার থেকেই খুলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ মধ্যরাতে অথবা কাল ভোরে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেয়া হবে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো বিএনপি খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে চায় বিএনপি; সরকারের অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাবে কাতার রাজশাহীতে কাপড়ের দোকানে আগুন, ১৫-২০ লাখ টাকার ক্ষতি

অনীহা কেন করোনা টেস্ট করতে

Reporter Name / ২৭৬ Time View
Update : সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪

কী যে কষ্ট পেলাম! একদম কোভিডের মতো মনে হলো। বুকে ব্যথা। জ্বর বেশি না উঠলেও ঠান্ডাটাই বেশি। কাশি দিতে গেলে বমি হয়ে যায়। কিছু খেতেই পারি না। সাত দিনে শরীর ভেঙে গেছে। টেস্ট করিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে বলেন— না, চার দিন পরে ডাক্তারের কাছে গেলাম, অন্যান্য টেস্টের সঙ্গে ডেঙ্গু ও কোভিড টেস্টও দিয়েছিলেন। ডেঙ্গু করিয়েছি। কোভিড করানো হয়নি। খামোখা ঝামেলা, তিনটা টিকা দেওয়া আছে।

জ্বর নিয়ে এই ভোগান্তির কথা জানান— বেসরকারি চাকরিজীবী মাসুদুর রহমান। ২০২০ সালে তার দুই বার করোনা পজিটিভ হয়েছিল। সেই সময়ের ভোগান্তির সঙ্গে এবারের মিল খুঁজে পেয়ে তার প্রশ্ন— আসলেই কি করোনা চলে গেছে? কেবল মাসুদ নন, এরকম নানা ভোগান্তির কথা বলছেন মানুষ। জ্বর, ঠান্ডা, মুখে স্বাদ না থাকা— এসব মিলিয়ে নিচ্ছেন আগের অভিজ্ঞতা থেকে। কিন্তু কেউ আর টেস্ট করাচ্ছেন না।

ফাতেমা নাসরিন নিজে জ্বর থেকে উঠতে না উঠতে পরিবারের সদস্যরা একের পর এক ভুগতে শুরু করেন। তিনি বলেন, আমার কখনও জ্বর এলে এত দীর্ঘ সময় শরীর খারাপ থাকেনি। ১০ দিনেও শরীরে শক্তি ফিরে আসে না। কী বাজে কফ-কাশি নিয়ে কাটাচ্ছি। মুখে কোনও স্বাদ নেই। আমারটা সারতে না সারতে ছেলের জ্বর হলো। আবারও ৮দিনের ধাক্কা। আগেও জ্বর হয়েছে, এরকম কষ্ট হয়নি। চিকিৎসক বলেছিলেন, টেস্ট করাতে কিন্তু করানো হয়নি।

বাংলাদেশে করোনা টেস্ট বা এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসছে কিনা, তা নিয়ে কোনও গবেষণা বা তথ্য নেই। পাশের দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে— অন্য রোগ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর রুটিন করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসছে। মাস কয়েক আগে করোনা ভাইরাসের নতুন উপপ্রজাতি ‘কেপি.২’-র খোঁজ মিলেছে সেখানে। করোনার ওমিক্রন প্রজাতির ওই সাব-ভ্যারিয়েন্ট (কেপি.২)-এর প্রকোপে যুক্তরাষ্ট্রেও আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, ওমিক্রনের একটি ভ্যারিয়েন্ট কেপি-২ এর সংক্রমণে ২৮.২ শতাংশ মানুষের কোভিড আক্রান্তের খবর মিলেছে। গত মার্চ মাসে বেশকিছু রোগী চিহ্নিত হয়। প্রতিবেদন বলছে, গত চার বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিডের গ্রীষ্মকালীন তরঙ্গ দেখা গেছে এবং চলতি গ্রীষ্মেও সেটি বাড়তির দিকেই প্রতীয়মান হচ্ছে। যদিও তা গত মৌসুমের তুলনায় কম গুরুতর বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান ফ্রান্সিসকোর (ইউসিএসএফ) মেডিসিনের অধ্যাপক এবং সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর পিটার চিন-হং এবিসিকে বলেছেন, ‘গত চার বছরে গ্রীষ্মকালে আমাদের কোভিডের সংক্রমণ বেড়েছে। আমরা এই গ্রীষ্মেও বৃদ্ধির শঙ্কা করছি, তবে এটি সম্ভবত খুব বেশি বাড়বে না।’

তীব্র গরমে জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যা লেগেই রয়েছে। সিম্পটমগুলো করোনার সঙ্গে মিলিয়ে মানুষ সন্দেহ করলেও নানা কারণে টেস্টের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে না। তবে, করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার কথাই বলছেন চিকিৎসকরা। তাদের কথায়, ‘ওই ভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে, তেমনটা তো নয়। তবে সেটি এখন আগের মতো মারাত্মকও নয়।’

পশ্চিম বাংলা থেকে শুরু করে আমেরিকা প্রায়শই নতুন ভ্যারিয়েন্ট এবং সেগুলো বার বার ফিরে আসার তথ্য দিচ্ছে, অথচ আমাদের এখানে করোনার উপকরণ নিয়ে হাসপাতালে গেলেও টেস্ট করানো হচ্ছে না কেন, প্রশ্নে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘জ্বরের নানা প্যাটার্ন রয়েছে। করোনা, ডেঙ্গু, সাধারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও জ্বর হয়। রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পক্ষ থেকে গবেষণা করা দরকার— এখন যে জ্বর সেটি কোন প্যাটার্নের, তা শনাক্তকরণের জন্য। সেটি ঠিকমতো করা হয় না বলেই চিকিৎসকমহলের মধ্যে সংশয় কাজ করে যে, জ্বরগুলো কী ধরনের। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা না করে পূর্ণাঙ্গ ভাইরোলজিক্যাল পরীক্ষা দরকার। তা না হলে অসম্পূর্ণ বা ভুল ধারণা থেকে যায়।’

এ সময় যাদের জ্বর হচ্ছে তারা এটাকে করোনার মতো কষ্ট বলেই চিহ্নিত করছেন। সেক্ষেত্রে আমাদের নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো আসছে কিনা, তা জানার চেষ্টা থাকা দরকার বলে মনে করেন কিনা, জানতে চাইলে করোনাভাইরাস মহামারি মোকোবিলায় একটি ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র সদস্য ইকবাল আর্সলান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘করোনা এখন স্থায়ীভাবে রেসপিরেটরি ইলনেস ভাইরাসে পরিণত হয়েছে। ফলে অন্যান্য ভাইরাসের মতো সেটিরও প্রকোপ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এটিকে ভুলে যাওয়ার সময় আসেনি। মহামারি চলে গেছে এটা বলার উপায় নেই। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় এটা মনিটরিং হওয়া খুব দরকার। কেননা, এখনকার জ্বরে কাশিটা যেমন দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, সেটা স্বাভাবিক না। যে যে উপসর্গগুলোর কথা বলছে রোগীরা, সেটা কেন, এইটা জানা দরকার। আবার শুরু থেকেই ভ্যাকসিনের রোল নিয়েও আলোচনা সমালোচনা আছে। তিন ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও কোভিড হয়েছে, এমন রোগী আছে। তাহলে পরিস্থিতি আসলে কী, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।