• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি- সিইসি ১৭ ঘণ্টাতেও উদ্ধার হয়নি শিশুটি, চলছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ আজ সন্ধ্যা ৬টায় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম প্রথম ধাপে ১২৫ জনের নাম ঘোষণা করলো এনসিপি রাষ্ট্রের ভয়ে কোনো বাংলাদেশিকে বাঁচতে হবে না-মানবাধিকার দিবসে তারেক রহমান তফসিল ঘোষণার পর থাকবে না ব্যানার-ফেস্টু, করা যাবে না মিছিল-মিটিং ইশতেহার তৈরিতে অনলাইনে জনতার মতামত নেবে জামায়াত গাজীপুরে কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ দুর্নীতি দমনে বিএনপির ৭ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করলেন তারেক রহমান

মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়া নিয়ে যা বলছেন কৃষকরা

Reporter Name / ১৩৬ Time View
Update : রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩

কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে কয়েকদিন ধরেই জনমনে অস্বস্তি চলছে। গত দুই দিন ধরে সেই অস্বস্তি অনেকটা অসন্তুষ্টিতে পরিণত হয়েছে। শনিবার (১ জুলাই) কুড়িগ্রামের বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০-৫২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভরা মৌসুমে কেন এত দাম? জেলার মরিচের ক্ষেত ঘুরে, চাষিদের সঙ্গে কথা বলে এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন এই প্রতিবেদক।

শনিবার বিকালে কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের খালিশা কালোয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে মরিচের ক্ষেত। কয়েকটি জমি থেকে কৃষকরা মরিচ সংগ্রহ করে তা আগত পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। কৃষক ও পাইকারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের এই সময়ে ক্ষেতে যে পরিমাণ মরিচের ফলন হওয়ার কথা কৃষকরা সেই পরিমাণ ফলন পাচ্ছেন না। উৎপাদন কম হওয়ায় এবং চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। এ ছাড়াও আমদানি না হওয়ায় দাম বাড়ার কারণ বলছেন কৃষকরা। জমি থেকে ফসল উত্তোলন করে ক্ষেতেই প্রতি মণ মরিচ ১৫-১৬ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন কুড়িগ্রামের কৃষকরা।

কৃষক মুনতাসির রহমান বলেন, ‘আমি ৬০ শতাংশ জমিতে মরিচ আবাদ করেছি। গত কয়েকদিন আগের টানা খরার কারণে মরিচের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, পাতা কুকড়ে গিয়েছিল। যে পরিমাণ জোয়ার (ফুল) আসার কথা তা আসেনি। ফলে এই সময়ে যে পরিমাণ ফলন হওয়ার কথা তা হয়নি। উৎপাদন কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

‘আমি আজ মাত্র দেড়-দুই মণ মরিচ তুলতে পেরেছি। অথচ আমার এই ৬০ শতক জমি থেকে অন্তত ৬-৭ মণ মরিচ পাওয়ার কথা। এখন বৃষ্টি পেয়ে গাছ সতেজ হয়েছে, জোয়ারও এসেছে। কয়েকদিন পর ফলন বেড়ে যাবে। তখন দামও কমে যাবে।’ যোগ করেন এই কৃষক।

মরিচের উৎপাদন নিয়ে একই কথা জানান কৃষক নরেশ চন্দ্র ও নিজাম উদ্দিন। তারা বলেন, ‘কয়েকদিন আগের খরার কারণে গাছে তেমন ফুল ছিল না। বর্তমানে ক্ষেতে মরিচ কম। বাইরে থেকে মরিচ আমদানি নেই। উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বাড়ায় দাম বেশি।

দাম কমার সম্ভাব্য সময় জানতে চাইলে এই কৃষকরা বলেন, ‘বৃষ্টির পানি পাওয়ার পর গাছ সতেজ হইছে। প্রচুর পরিমাণে জোয়ারও আসতেছে।এই ফলনটা ওঠা শুরু করলে দাম কমে যাবে। সেটাও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। আর এর মধ্যে মরিচ আমদানি হলে আগেই কমে যাবে। আবার অতিবৃষ্টিতে গাছ ও ফসল নষ্ট হলে দাম পতন হবে না বরং আরও বাড়তে পারে।

কৃষক নরেশ চন্দ্র বলেন, ‘ জমির মধ্যে মরিচের ধরতি (ফলন) নাই। গাছে ফল নাই। অতিরিক্ত খরার কারণে ফলন হয় নাই। এখন বৃষ্টির কারণে গাছ ভালো হইছে, জোয়ার আসছে। এই ফল পাওয়া গেইলে তখন দাম কমতে পারে।

আরেক কৃষক আবু সায়েম বলেন, ‘আজ (শনিবার) এই মাঠ থেকে মাত্র ১০-১২ মণ মরিচ ওঠানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই সময় এই মাঠে অন্তত ৫০-৬০ মণ মরিচ পাওয়ার কথা। কয়েকদিন আগের টানা গরম আর খরায় প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। এখন বৃষ্টি হওয়ার কারণে গাছে জোয়ার আসছে। তবে অতিবৃষ্টি হলে আবারও গাছের ক্ষতি হতে পারে। তখন আবার দাম কমার সম্ভাবনা কম থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আজ ক্ষেত থেকে প্রতি মণ মরিচ ১৫-১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাইকাররা এগুলো জেলার বাইরে পাঠাবেন। ঘাটতি ও পরিবহন খরচ মিলে তারা যে দামে বিক্রি করবেন তাতে প্রতি কেজি ৭০০-৮০০ টাকা পড়ে যাবে।

লালমনিরহাট থেকে মরিচ কিনতে আসা পাইকার আপেল বলেন, আমরা প্রতি মণ মরিচ ১৫-১৬ হাজার টাকা কিনলাম। এই মরিচ জেলার বাইরে পাঠাবো। ক্ষেতে বেশি দামে কিনলে আমরা তো কম দামে বেচতে পারবো না!

কুড়িগ্রাম শহরের পৌর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০-৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কয়েকদিনের মধ্যে মরিচ আমদানি না হলে এই দাম আরও বেড়ে যাবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘খরায় যেমন ফুল কম এসেছিল তেমনি এখন বৃষ্টিতে গাছে ফুল আসছে। অতিবৃষ্টিতে এই ফুল আবারও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে এই সময়ে কাঁচা মরিচের এই দাম অস্বাভাবিক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।