• ঢাকা, বাংলাদেশ সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না ঢাবি ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নামল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে-ড. আসাদুজ্জামান রিপন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে রাজশাহীতে জমজমাট মেস ব্যবসা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা সোমবার থেকেই খুলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ মধ্যরাতে অথবা কাল ভোরে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেয়া হবে আরও ৩৬ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলো বিএনপি খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে চায় বিএনপি; সরকারের অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাবে কাতার রাজশাহীতে কাপড়ের দোকানে আগুন, ১৫-২০ লাখ টাকার ক্ষতি

কানে কম শুনলে কী করবেন, চিকিৎসা কী

Reporter Name / ১৪০ Time View
Update : শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩

সম্প্রতি পালিত হলো বিশ্ব শ্রবণ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য সবার জন্য কান ও শোনার যত্ন। কান আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। শোনা এবং ভারসাম্য রক্ষা ছাড়াও সৌন্দর্যবর্ধনে কানের ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বে গড়ে ৪৭ কোটি মানুষ কানে কম শোনা সমস্যায় ভোগেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ৯০ মিলিয়নের বেশি মানুষ শোনার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু। বাংলাদেশেও এর সংখ্যা মোটেও কম নয়, প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোক কানে কম শোনার সমস্যায় ভোগেন। আমাদের যুবসমাজ ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহারের ফলে কানে শোনার সমস্যায় অনেক বেশি ভুগছেন। এমনকি কানে শোঁ শোঁ আওয়াজ সমস্যা নিয়েও অনেকেই আসেন। কানে না শোনার অক্ষমতা এক বা উভয় কানে হতে পারে। সময়মতো উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করলে কম শোনার সমস্যা বেশিরভাগই প্রতিরোধ করা যায়।

  •  শ্রবণ প্রক্রিয়া

আমাদের কানের তিনটি ভাগ রয়েছে-বহিঃকর্ণ, মধ্যঃকর্ণ এবং অন্তঃকর্ণ। বহিঃকর্ণ-শব্দ তরঙ্গ কানের পর্দাকে ভাইব্রেট করে। মধ্যঃকর্ণ-মধ্যকর্ণের হাড়কে ভাইব্রেট করে শব্দ তরঙ্গকে বাড়িয়ে দিয়ে অন্তঃকর্ণের তরলে পৌঁছায়। অন্তঃকর্ণ-কক্লিয়াতে অবস্থিত অর্গান অব কর্টির সংবেদী লোম কোষগুলো উদ্দীপ্ত হয়ে ইলেক্ট্রিকেল ইমপালস এ পরিণত হয়ে অডিটরি নার্ভের মাধ্যমে ব্রেইনে যায় এবং আমরা শুনি।

কানে কম শোনার অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বহিঃকর্ণের প্রদাহ যেমন কানে ময়লা জমে যাওয়া, কানে খৈল বা ওয়াক্সের সঙ্গে ধুলাবালি জমা, ভাইরাল ইনফেকশন ইত্যাদি। মধ্যকর্ণের সমস্যাগুলো হচ্ছে কান পাকা রোগ, পর্দায় ছিদ্র, মধ্যকর্ণে পানি/পুঁজ/রক্ত জমে যাওয়া, হাড়ের জোড়ায় সমস্যা, ফুট প্লেট শক্ত হয়ে যাওয়া (অটোস্ক্লেরোসিস) এবং অন্তঃকর্ণের সমস্যা হচ্ছে জন্মগত বধিরতা, কানে যে কোনো টিউমার বৃদ্ধি পেতে থাকলে, কানের অভ্যন্তরে হিয়ারিং সেল নষ্ট হয়ে শ্রবণশক্তি হ্রাস। কিছু কিছু ওষুধ অটোটক্সিক ড্রাগ হিসাবে চিহ্নিত যেমন-এমাইনোগ্লাইকোসাইড, জেন্টামাইসিন ফ্রুসেমাইড (ল্যাসিক্স), এন্টিক্যান্সার, এন্টিটিউবারকুলার ড্রাগ অথবা অ্যাসপিরিন বেশি মাত্রায় গ্রহণ করা হলে।

  • আপনি কি কম শুনছেন

শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে কিনা কীভাবে বুঝবেন? এরকম কোনো উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন- অন্য মানুষের কথা ভালো করে বুঝতে পারছেন না, বিশেষ করে হইচই পূর্ণ জায়গায়। বারবার কথা পুনরাবৃত্তি করতে অনুরোধ করছেন। টেলিভিশনের ভলিউম বাড়িয়ে শুনতে হয়। মোবাইলে কথা শুনতে কষ্ট হয়? অন্যান্য মানুষের কথা শোনার জন্য গভীরভাবে মনোযোগ দেওয়া লাগে এবং গভীর মনোযোগের কারণে কিছুক্ষণ পরে ক্লান্তি লেগে যায়। যে কোনো কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেলে সাধারণত এ উপসর্গগুলো দেখা দেয়। সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শে, সার্জারি বা হিয়ারিং এইড এর ব্যবহার কানের সমস্যা কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করে। কিছু কিছু শিশুর জন্ম থেকে শ্রবণশক্তি কম থাকতে পারে। একে কনজেনিটাল হিয়ারিং লস বলে। কনজেনিটাল হিয়ারিং লস পরিবারের অন্য সদস্যদের থাকলে শিশুর হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে শিশু জন্মের সময় যথেষ্ট অক্সিজেন না পেলে অথবা মাথায় আঘাত পেলেও এটি হতে পারে। নবজাতকের জণ্ডিসের কারণেও শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। এক্ষেত্রে নবজাতকের শোনার কিছু টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। উন্নত বিশ্বে বাচ্চা জন্মের পর এসব টেস্ট করার সুবিধা থাকে। আমাদের দেশে এমন সব টেস্ট কিছু স্পেশালাইজড সেন্টারে আছে। জাতীয়ভাবে হিয়ারিং স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম চালু করা আবশ্যক। এতে প্রাথমিক পর্যায়েই জন্ম বধিরদের শনাক্তকরণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে।

  • কম শোনা কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়

শিশুদের শ্রবণক্ষমতা স্ক্রিনিং করা আবশ্যক। স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ন্যাশনাল হিয়ারিং স্ক্রিনিং অন্তর্ভুক্ত করা। হিয়ারিং ডিভাইস এবং থেরাপি সহজলভ্য করা। স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের প্রশিক্ষিত করা। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, অটোটক্সিক ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার। অযথা ম্যাচের কাটি, মুরগির পালক, মাথার ক্লিপ, কচুর ডাঁটা, কটনবাডর্স এগুলো দিয়ে কানে খোঁচাখুঁচি না করা। কানে যাতে পানি না যায় সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে কান পরিষ্কার না করানো। উচ্চ আওয়াজ এড়িয়ে চলা। শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করা। শব্দটি কত জোড়ে তা দেখুন-কানাকানি-৩০ ডিবি, কথোপকথন-৬০ ডিবি, ব্যস্ত ট্রাফিকে-৭০-৮৫ ডিবি, মোটরবাইক-৯০ ডিবি, হেডফোনের মাধ্যমে পূর্ণ ভলিউমে গান শোনা-১০০-১১০ ডিবি। হেডফোন ব্যবহার করার সময় নয়েজ ক্যানসেলিং ইয়ার ফোন ব্যবহার করুন। ৬০ শতাংশের ওপরে ভলিউম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

হিয়ারিং স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে শিশুদের কানে শোনার পরীক্ষা শিশুর জন্মের এক মাস সময়ের মধ্যে পরীক্ষা ও তিন মাস সময়ের মধ্যে রোগ নির্ণয় এবং ছয় মাসের মধ্যে চিকিৎসা করাতে হবে।

কান বন্ধ হলে প্রথমে মুখ বন্ধ করুন এবং হাতের দুই আঙুল চেপে ধরুন। অর্থাৎ এ অবস্থায় নাক বা মুখে কোনো বাতাস ঢুকছে না বা প্রবেশও করছে না। এবার নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ার মতো করে চাপ দিন। কিন্তু নাসারন্ধ্র দিয়ে বাতাস বেরোতে দেবেন না। দেখবেন ‘পপ’ শব্দে বন্ধ কান খুলে গেছে। খুব জোরে বাতাসের চাপ দেবেন না। এতে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রথমবার কাজ না হলে কয়েকবার চেষ্টা করতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সার্জারি বা এসিস্ট ও ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে। বছরে অন্তত একবার কানে শোনার টেস্ট করা বাঞ্ছনীয়।

লেখক : নাক, কান, গলা ও হেড-নেক বিশেষজ্ঞ সার্জন, পরিচালক, কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট কর্মসূচি, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।