• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না দেশে পৌঁছেছে সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত ৬ সেনাসদস্যের মরদেহ একের পর এক মিছিল মানিক মিয়া এভিনিউয়ে রাজশাহীতে হিমেল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ডা. জুবাইদা প্রাপ্য সম্মান পেলে রাশিয়া আর কোনো যুদ্ধে জড়াবে না: পুতিন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ (শনিবার) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ওসমান হাদি মারা গেছেন ওসমান হাদিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় সাভারের রিসোর্টে, তিন ঘণ্টা চলে বৈঠক আইপিএলের পুরো আসরে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না মোস্তাফিজ হাদির স্বাস্থ্য স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষায়; ব্রেন সক্রিয় করতে প্রয়োজন অপারেশন

পবায় রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হলো ১১৭টি আমগাছ

Reporter Name / ৩২ Time View
Update : বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

প্রিয়জন ডেস্কঃ রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় রাতের আঁধারে পরিকল্পিতভাবে ১১৭টি উন্নত জাতের আমগাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার ভোরে সিন্দুর কুসুম্বী কাজীপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি আমবাগানে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই বছরের শ্রম, স্বপ্ন ও বিনিয়োগ এক রাতেই হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক সাইদুর রহমান। ঘটনাটি এলাকাজুড়ে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

ভোরের কুয়াশা ভেদ করে বাগানে পৌঁছে ধ্বংসস্তূপ দেখে হতবাক হয়ে পড়েন কৃষক সাইদুর রহমান। সারি সারি আমগাছ গোড়া থেকে কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ডালপালা ও পাতার স্তূপ। অনেক গাছে তখনও নতুন মুকুলের কুঁড়ি ঝুলছিল, যা দেখে চলতি মৌসুমে ভালো ফলনের আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু রাতের মধ্যেই সেই স্বপ্ন নির্মমভাবে ভেঙে দেয় দুর্বৃত্তরা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাইদুর রহমান জানান, দুই বছর আগে সিন্দুর কুসুম্বী মৌজায় সাড়ে ১৫ শতক জমিতে তিনি ১৩৩টি উন্নত জাতের আমগাছ রোপণ করেন। এর মধ্যে ছিল বারোমাসি, কাটিমন, আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গৌড়মতি ও বারি-৪ জাতের আমগাছ। শুরু থেকেই নিয়মিত সেচ, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই দমনে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে অনেক গাছে মুকুল আসায় এবছর ফল বিক্রি করে পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতির স্বপ্ন দেখছিলেন।

তিনি বলেন,
“গতকালই আমগাছের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে প্রায় ৬০ কেজি রসুনের বীজ রোপণ করেছি। সব মিলিয়ে বড় পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ভোরে এসে দেখি সব শেষ। ১৩৩টি গাছের মধ্যে ১১৭টি কেটে ফেলা হয়েছে। মনে হচ্ছে কেউ যেন আমার বুকের ভেতর ছুরি চালিয়েছে।”
তার দাবি, গাছ, পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ শুধু আর্থিক নয়—দুই বছরের পরিশ্রম, ভবিষ্যৎ আয়ের সম্ভাবনা ও পরিবারের জীবিকার নিশ্চয়তাও একসঙ্গে ভেঙে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকাটি তুলনামূলক নিরিবিলি হওয়ায় গভীর রাতে এ ধরনের নাশকতা চালানো দুর্বৃত্তদের জন্য সহজ হয়েছে। খবর পেয়ে আশপাশের কৃষক ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন,
“গাছের সাথে শত্রুতা থাকা উচিত নয়। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা শুধু একজন কৃষকের ক্ষতি নয়; এটি এলাকার কৃষি উৎপাদন ও পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

কাজীপাড়া এলাকার কৃষক ইশা খান বলেন,
“এটা নিছক দুষ্টুমি নয়, পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। একজন কৃষকের জীবনের সঙ্গে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আজ সাইদুর রহমান, কাল অন্য কেউ—এভাবে চলতে থাকলে কৃষিকাজে মানুষ আগ্রহ হারাবে।”

স্থানীয়দের ধারণা, ঘটনার পেছনে পূর্বশত্রুতা, জমি সংক্রান্ত বিরোধ কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কেউ কেউ মনে করছেন, বাগানটি ভালোভাবে বেড়ে ওঠায় ঈর্ষা থেকেই এ নাশকতা চালানো হয়েছে। তবে এখনো প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী কৃষক সাইদুর রহমান পবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে পবা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রতাপ কুমার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে। পূর্বশত্রুতা ও জমি বিরোধসহ সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।