মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর অব্যাহত হুমকি আর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ কাজ করে যাচ্ছে মস্কো। এবার সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দাবি করলেন পুতিন। অত্যাধুনিক পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বুরভেস্টনিকের সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি রুশ প্রেসিডেন্টের। রোববার, ইউক্রেন যুদ্ধে নিয়োজিত সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি জানান, রাশিয়া ছাড়া অন্য কারো কাছে নেই এই অস্ত্র।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘রুশ বিশেষজ্ঞরা আমাকে বলেছিল, এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, কিন্তু এর গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।’
মস্কোর দাবি, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রতিরক্ষার জন্য অপ্রতিরোধ্য হবে নাইনএম সেভেন থ্রি জিরো বুরভেস্টনিক। কত দূরের লক্ষ্যবস্তুকে এটি আঘাত করতে পারবে তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। তার মানে যেকোনো পাল্লায় আঘাত হানতে সক্ষম এই মিসাইল। প্রয়োজনে গতিপথ পরিবর্তন করেও শত্রুকে আক্রমণ করতে পারবে বলে দাবি রুশ প্রেসিডেন্টের। ন্যাটোর কাছে ক্ষেপনাস্ত্রটিক এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল নামে পরিচিত।
অস্ত্রটিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় এবং এর ব্যবহার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুতের বিষয়ে রুশ সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে কথা বলেন পুতিন। তার কাছে ক্ষেপনাস্ত্রটির সফল পরীক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান পুতিন।
রাশিয়ার চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ বলেন, ‘গত ২১ অক্টোবর চালানো পরীক্ষায় ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৪ হাজার কিলোমিটার উড়েছিল এবং প্রায় ১৫ ঘণ্টা আকাশে ছিল। এটি প্রতিপক্ষের ছোঁড়া যেকোনো ক্ষেপনাস্ত্রকে রুখে দিতে সক্ষম।’
২০১৮ সালে বুরেভেস্টনিক তৈরির ঘোষণা দেন পুতিন। এরপর থেকে এটি তৈরি অসম্ভব বলে দাবি করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ক্রুজ মিসাইলের সফল পরীক্ষার পর তারা বলছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও চ্যালেঞ্জ জানাবে এই পারমানবিক ক্ষেপণাস্ত্র।
সাবেক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা স্ট্যানিস্লাভ ক্রাপিভনিক বলেন, ‘এটি একটি গেম চেঞ্জার। সামরিক বাহিনী দ্বারা সুরক্ষিত যেকোনো নো-ফ্লাই জোনেও আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে এটি। ক্ষেপণাস্ত্রটি মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গোল্ডেন ডোম নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু করা উচিত।’
সাত বছর আগে ঘোষণা দিলেও মূলত ২০০১ সালে অ্যান্টি ব্যালিস্টিক মিসাইল চুক্তি ১৯৭২ থেকে ওয়াশিংটন সরে আসার পর এবং ন্যাটো জোটকে সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রতিক্রিয়া হিসেবে পুতিন অস্ত্রটি তৈরিতে মনোনিবেশ করেন।
বিশ্বের মোট অস্ত্রভাণ্ডারের প্রায় ৮৭ শতাংশের মালিকানা দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের। ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্ট-এফএএসের তথ্যানুসারে, বর্তমানে রুশ বাহিনীর কাছে আছে ৫ হাজার ৪৫৯ টি পারমাণবিক ওয়ারহেড। আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আছে ৫ হাজার ১৭৭টি। এগুলো দিয়ে পৃথিবীকে কয়েকবার ধ্বংস করা যেতে পারে।






















