
প্রিয়জন ডেস্কঃ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেঘনা নদীতে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। শিকারের পর সেই মাছ শরীয়তপুরের গোসাইরহাট নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন মাছের বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। জেলায় প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশের অভিযান সত্ত্বেও জেলেরা এ অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোদালপুর ইউনিয়নের মেঘনা শাখা নদীর পাড়ে ছৈয়ালকান্দির বাইদ্যাপাড়ায় ও কুচাইপট্রি আশ্রয়ণ কেন্দ্রের পাশের খালের পাশে তিনটি স্থানে অস্থায়ী আড়ৎগুলোতে গিয়ে প্রকাশ্যে ইলিশ মাছের ট্রলার আসছে আর মাছ বিক্রির চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ছৈয়াল কান্দির পাশে বাইদ্যাপাড়ায় প্রকাশ্যে মা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার লুকিয়ে বিক্রির চেষ্টা দেখা গেলেও বেশিরভাগ অস্থায়ী বাজারে চলছে প্রকাশ্য বেচাকেনা। খালের মধ্যেই নৌকার উপর কেনাবেচা হচ্ছে মাছ। দূরদূরান্ত থেকে পাইকার এসেছেন এসব ইলিশ কেনার জন্য। শুধু পাইকার এসেছেন এমন নয় এসেছেন গ্রামবাসী ও আড়তদাররাও। গ্রামবাসী এক হালি, দুই হালি ইলিশ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। পাইকারেরা কিনছেন ঝুড়ি ভরে। তারা মাছ নেয়ার জন্য অটোরিকশা নিয়ে এসেছেন।
সাধারণ ক্রেতারা মাছ কিনে বাড়ি যাওয়ার সময় পাইকার-আড়তদারদের দুটো কথা শুনিয়ে যাচ্ছেন। কারণ পাইকারদের কারণে তারা কম দামে মাছ কিনতে পারছেন না।
গোসাইরহাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, ‘অক্টোবরে ২২ দিন মা-ইলিশ ডিম ছাড়তে নদীতে উঠে আসে। ভোলা দেশের অন্যতম মৎস্য প্রজনন অভয়াশ্রম। মেঘনা ও মেঘনা শাখা নদী, জয়ন্তী নদীসহ এ অভয়াশ্রম জলসীমায় জাল ফেলা, ইলিশ মাছ শিকার, বহণ, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। একটি মা ইলিশ নদীতে পাঁচ-ছয় লাখ ডিম ছাড়বে। নিষেধাজ্ঞা মেনে যদি সঠিকভাবে মা ইলিশের ডিম ছাড়ার পরিবেশ তৈরি করা যায় এবং জাটকা সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে দেশের মানুষের ইলিশ মাছের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।’
শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, কোদালপুর লঞ্চঘাটসহ কুচাইপট্রি খেঁজুরতলা মেঘনা শাখা নদীর বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে মাছ শিকার করা হচ্ছে।
একপক্ষ বড় দ্রুতগামী ট্রলার নিয়ে সারা রাত মাছ শিকার করেছে। আরেকপক্ষ ভোরে ছোট নৌকা–জাল নিয়ে মাছ শিকার করতে নেমে পড়েছে।
চাঁদপুর নৌফাঁড়ির ইনচার্জ ইহছানুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন অভিযান করে জেলেদেরসহ জাল ট্রলার ও মাছ জব্দ করি।’
বিশাল এলাকা, সব জায়গায় তো একযোগে অভিযান চালানো সম্ভব নয়, এরপরও তারা যথাসাধ্য অভিযান চালাচ্ছেন। মেঘনা নদীতে যেনো নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মা ইলিশ নিধন করা না হয়, তিনি সেই ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, তারা দিনরাত মেঘনা, জয়ন্তী ও মেঘনা শাখা নদীতে অভিযান চালাচ্ছেন। একদিকে অভিযান চলছে, আরেকদিকে জেলেরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ ধরতে নেমে যাচ্ছেন। লোকবল সংকট মেনে নিয়েই তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন বলে জানান।