নির্ধারিত সময়ের সাত ঘণ্টা পর গতকাল (শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর কারুর জেলার সমাবেশে হাজির হন অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়। দল গঠনের এক বছরেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ নেতাকে কাছ থেকে দেখতে শুরু হয় হাজার হাজার মানুষের হুড়োহুড়ি।
এসময় পদপিষ্ট হয়ে হতাহত বহু ভক্ত সমর্থক। মুহূতেই থালাপতি বিজয়ের দল তামিলগা ভেত্রি কাজগাম-টিভিকের প্রচার সভা রূপ নেয় মৃত্যুর মিছিলে। এ তালিকায় বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একই পরিবারে অনেকে প্রাণ যেমন হারিছেন, তেমনি অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে। এ অবস্থায় ভারত জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন স্বজনরা।
সামাবেশে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের দুই সন্তান ছিল। বড় ভাই মারা গেলেন, ছোট ভাই আহত। আমার শ্যালিকা আইসিইউতে আছেন। আমি কী করবো কী করা উচিত জানি না।’
এত মানুষ হতাহতের ঘটনায় হৃদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ বলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন থালাপতি বিজয়। এছাড়া এ দুর্ঘটনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফলতিকে দায়ী করছে থালাপতির দল।
পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, সমাবেশস্থলে ১০ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও প্রায় ৩০ হাজার সমর্থক যোগ দিয়েছিলো। এছাড়া শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রচার সভার অনুমতি দেয়া হয়েছিলো। বিজয় দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পৌঁছানোর কথা থাকলেও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে পৌঁছান। না খেয়ে এত দীর্ঘসময় মানুষ অপেক্ষা করায় গরমে অনেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। যখন থালাপতি সমাবেশ যোগ দেন, তখন অনাকাঙ্খিতভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রোপদি মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও। এছাড়া মারা যাওয়া প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ১০ লাখ রুপি এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের জন্য এক লাখ রুপি অনুদান দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তামিলনাড়ুর ৩৮টি জেলার গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্রতি শনিবার ও রোববার সমাবেশ করে করে যাচ্ছেন থালাপতি। ২০২৬ সালে হতে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এ প্রচারণায় নামেন থালাপতি। প্রচার সমাবেশগুলোতে বিরোধী দল বিজেপি ও ডিএমকে তুলোধুনো করছিলেন পর্দা কাঁপানো এ অভিনেতা। কারুরের সমাবেশে দুর্ঘটনার পর পরবর্তী সমাবেশগুলোতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।






















