চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সরকারের রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। আয় কমে যাওয়ায় ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার প্রায় পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম। পাশাপাশি ব্যাংকের উচ্চ সুদহারের কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ যেমন কমেছে, তেমনি অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে বিদেশি বিনিয়োগ গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। বিনিয়োগ কমায় মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানিও কমেছে। সব মিলিয়ে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই চাপে ছিল সামগ্রিক অর্থনীতি। এ কারণে অর্থবছরের শুরু থেকেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি তৈরি হয়। এর মধ্যে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়লে সেই চাপ আরও বাড়ে। এতে অর্থবছরের প্রথমার্ধ অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকায়। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতির কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৮১ শতাংশে নেমেছে। ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র (এলসি) খোলার জটিলতায় কমেছে মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি, যার প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক অর্থনীতিতে। এই চাপের মধ্যেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণ করতে গিয়ে শতাধিক পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরে সমালোচনার মুখে ৯টি পণ্য ও সেবার বিপরীতে শুল্ক-কর কমালেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলেই আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের, যা মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বাড়াবে।