বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের মুখে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইম জাহান পালিয়েছেন বলে জানা গেছে। আন্দোলনকারীরা তাকে পদত্যাগে রবিবার (১১ আগস্ট) বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন। এরপর তিনি মেকানিক্যাল বিভাগের চিফ ইন্সট্রাক্টর ও বিভাগীয় প্রধান শফিউল আল আজিজের কাছে কর্মস্থল ত্যাগ করছেন মর্মে চিঠি দিয়ে যান।
এ ব্যাপারে সোমবার (১২ আগস্ট) বিকালে শফিউল আল আজিজ জানান, ছাত্রদের দাবির মুখে তিনি এ আপদকালীন সময়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক পাওয়ার বিভাগের অষ্টম পর্বের শিক্ষার্থী বাপ্পী রহমান, সমন্বয়ক খোরশেদ রেজা, কাব্য, নিরব, সাদিক, জোবায়ের, নাইম, রাজু প্রমুখ জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইম জাহানের বাবা আকবর আলী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। অর্থের বিনিময়ে সনদপত্র কিনে বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। তিনি বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে চাকরি পান। তার পরিবারের অনেকে ওই ভুয়া সনদে সরকারি চাকরি করছেন। তার (আবু সাইম জাহান) বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষার্থীদের নম্বর কর্তন, দুটি ফৌজদারি মামলা ও সাময়িক বরখাস্তের তথ্য গোপন করে চাকরিতে বহাল থাকাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিস্থিতি ও শিক্ষার মান উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করেছেন।
তারা আরও জানান, এসব অভিযোগ ছাড়াও আবু সাইম জাহান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। কোনও দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলতে গেলে তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। এসব কারণে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইম জাহানকে পদত্যাগ করতে রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি আরেক শিক্ষককে চিঠি দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন প্রতিষ্ঠানের মেকানিক্যাল বিভাগের চিফ ইন্সট্রাক্টর ও বিভাগীয় প্রধান শফিউল আল আজিজ।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিউল আল আজিজ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে আবু সাইম জাহান স্টেশন লিভ করেছেন। তিনি পদত্যাগ করেননি, হয়তো অন্যত্র বদলি হয়েছেন। যাওয়ার আগে এ মর্মে চিঠি দিয়ে গেছেন।’
এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইম জাহানের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তাই তার কোনও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।