• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না রাজধানীর শ্যামপুরে প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ আগুন দূর্গাপুরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বাড়ি ভাংচুর করে বাগানের ৪০টি আমগাছ কর্তন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) থানা ও ডিবি পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মোট ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষিজীবী শ্রমিক ইউনিয়ন রাজশাহী মহানগরীর দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত রাজশাহী মহানগরীর নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য তাকে রাত ১ টার সময় আটকিয়ে মতিহার পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য তলানিতে অর্থনীতিতে বাড়ছে চাপ মেলায় তারকাদের বই নারী ফুটবলে বিদ্রোহের মাঝেই কোচ বাটলারের অনুশীলন গাজায় শান্তি নয়, ট্রাম্পের কাণ্ডে নতুন যুদ্ধের শঙ্কা ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির হরতাল প্রত্যাহার

অনুপ্রবেশ ঠেকান রোহিঙ্গার

Reporter Name / ৫০ Time View
Update : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ১৬টি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের মাধ্যমে দেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে, যা দেশের জন্য কোনোভাবেই স্বস্তিদায়ক খবর নয়।

রোববার কালবেলায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, নাফ নদের একপাড়ে কক্সবাজারের টেকনাফ, অন্যপাড়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে চলছে বিদ্রোহীদের যুদ্ধ। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের ওপর অনেক দিন ধরে চলছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার ও উৎপীড়ন। রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে প্রথমে রাখাইন থেকে হেঁটে নাফ নদের ওপারের তীরে আসেন। নদের ওই তীরে নৌকা নিয়ে বসে থাকে দালালরা। এপারে বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তে থাকে দালালদের অন্য চক্র। রাতে দুইপাড়ের দালালরা টাকা নিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করাচ্ছে। এ কাজে দালালরা জনপ্রতি ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় উখিয়া-টেকনাফের সীমান্তে রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে চালাচ্ছে এ পাচার। দালালরা পারাপারের কাজে ব্যবহার করছে মাছ ধরার নৌকা। তারা নৌকার মাঝিদের বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের এসব নৌকায় করে নিয়ে পার করছে। এ-ও অভিযোগ রয়েছে যে, মাছ ধরার নামে কৌশলে টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের পারাপার করছেন জেলেরা।

গত ২০ মে থেকে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। এসব দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। নৌকাই যেখানে জলে নামা নিষিদ্ধ, সেখানে জলেও নামছে আবার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সহচর হচ্ছে! প্রশ্ন হচ্ছে, দায়িত্বরত প্রশাসন কী করছে? তারা কি এসবের দায় এড়াতে পারে? অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বলে বরাবরই দাবি করে থাকে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকার পরও তাদের এ দাবি যে খুব যুক্তিযুক্ত নয়—এ কথা বলাই বাহুল্য।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া এক অনুপ্রবেশকারীর ভাষ্যে, তার বাড়ি মিয়ানমারের বুথিডাংয়ে। যুদ্ধে সব ধ্বংস হয়ে গেছে সেখানে। তার বাবা মর্টার শেলের আঘাতে নিহত হয়েছেন। আরাকান আর্মি গ্রামে প্রবেশ করে এক ঘণ্টার মধ্যে সবাইকে গ্রাম খালি করতে বলে। না ছাড়লে, সবাইকে মেরে ফেলা হবে হুমকি দেয়। অনেক যুবক আরাকান আর্মির হাতে ধরা পড়ে এবং তাদের হত্যা করা হয়

আমরা জানি, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংস হামলার শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আট লাখের মতো মানুষ আসে। সব মিলিয়ে দেশে এখন প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ে আছে। সে সময় মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও আজ তারা দেশের অন্যতম বিপজ্জনক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বহু চেষ্টায়ও তাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি আজও। উপরন্তু তাদের ভরণপোষণের চ্যালেঞ্জসহ ক্যাম্পে সহিংসতা, খুন, মাদক এখন নৈমিত্তিক বিষয়। ফলে নতুন করে নানাভাবে তাদের অনুপ্রবেশ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন ও উৎপীড়ন চলছে, তা অবশ্যই অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। মানবতার বিরুদ্ধে এসব অপরাধকে আমরা নিন্দা জানাই। কিন্তু দেশটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা কেন আমাদের সমস্যা হবে? আমরা মনে করি, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর এ নিষ্ঠুরতার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মহল সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে এ বিশাল সংখ্যার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তাদের আন্তরিক পদক্ষেপ জরুরি। আমাদের প্রত্যাশা, সীমান্ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের যে চক্র তৎপর, যে কোনো প্রকারে তা উৎখাত করতে হবে। গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি বাড়াতে হবে প্রশাসনের টহল।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর