• ঢাকা, বাংলাদেশ রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
রাজশাহী রুটে একটি পুরো ট্রেন ভাড়া করেছেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুন্না মহিলাদলের প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ খড়খড়ি বাইপাস দৈনন্দিন বাজার কমিটির তালিকা প্রকাশ মিটফোর্ডে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর: আইন উপদেষ্টা আবারও সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, অংশ নিচ্ছে ৩০টি রাজনৈতিক দল ৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার সংসদ: নাহিদ ইসলাম ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচনের প্রত্যাশা বিএনপির, ফখরুল আজ থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা ১৬ জুলাই আবু সাঈদ ও ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস ঘোষণা কলম্বো টেস্টের প্রথম দিনে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২২০ রান দেশে ফিরছেন তেহরানে থাকা ২৮ বাংলাদেশি

আমানতের তুলনায় ঋণ বেশি, ঋণের সীমাও ভেঙেছে ইউনিয়ন ব্যাংক

Reporter Name / ৬৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩

গত বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) সংগৃহীত আমানতের চেয়ে তিন গুণ বেশি অর্থ ঋণ হিসেবে বিতরণ করেছে চতুর্থ প্রজন্মের ইউনিয়ন ব্যাংক। ওই সময়ে ব্যাংকটিতে আমানত ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা বাড়লেও বিনিয়োগ বাড়ে ২ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। এর ফলে ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) সীমা ছাড়িয়ে যায়। গত বছর শেষে এডিআর বেড়ে হয় ৯৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বলে ব্যাংকটি জানাচ্ছে। যদিও শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার সর্বোচ্চ সীমা ৯২ শতাংশ।

ব্যাংকটির গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এবং সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, গত বছর শেষে ইসলামি ধারার এই ব্যাংকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ প্রায় ১৪ টাকা ঋণাত্মক ছিল। ২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ৯ টাকা ৩৮ পয়সা।

তবে ২০২২ সালে ব্যাংকটির নিট মুনাফা বেড়ে হয়েছে ১৫১ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৮৭ কোটি টাকা।

আমানতের তুলনায় ঋণ বেশি

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর শেষ ব্যাংকটির ঋণ বেড়ে হয় ২২ হাজার ২২৭ কোটি টাকা, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছিল ১৯ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। ২০২১ সাল শেষে ঋণ ছিল ১৯ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় গত বছরের সেপ্টেম্বরের ঋণ কিছুটা কমে যায়। তবে অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে ঋণ বেড়ে যায় ২ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা।

এদিকে গত বছর শেষে ব্যাংকটিতে আমানত ছিল ২১ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছিল ২০ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির আমানত ২১ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা হলেও গত বছর শেষে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। ফলে আমানতের চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করে ব্যাংকটি। পাশাপাশি শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ ঋণাত্মক হয়ে পড়ে।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক যে কয়েকটি ব্যাংককে বিশেষ বিবেচনায় টাকা ধার দেয়, তার মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকও একটি। ওই ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাহিদামতো নগদ অর্থ জমা রাখতে ব্যর্থ হয়।

ভরসা অন্য ব্যাংকের ওপর

ব্যাংকটি মূলত গ্রাহক আমানতের পরিবর্তনে অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার ও আমানত এনে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, গত বছর ইউনিয়ন ব্যাংকে অন্য ব্যাংকগুলোর জমা রাখা আমানত বেড়ে হয় ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা ২০২১ সাল শেষে ছিল ৩ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের আমানত ছিল ২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ৩৪৯ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৩১৪ কোটি টাকা ও আল-আরাফাহ ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকা।

ব্যাংকটি ঋণের মধ্যে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি দিয়েছে ঢাকা বিভাগে ও ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি চট্টগ্রামে। অন্য বিভাগের ঋণের পরিমাণ সামান্যই। গত বছরে ব্যাংকঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ হলেও তহবিল খরচ ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আর খেলাপি ঋণের হার কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের বক্তব্য জানতে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাম্মেল হক চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

আলোচিত ভল্টে টাকা কমের কারণে

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার ভল্টে ১৯ কোটি টাকার গরমিল পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ব্যাংকটি পরিদর্শনে গিয়ে ঋণ অনিয়মের আরও নানা তথ্য খুঁজে পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২১ সাল শেষে ইউনিয়ন ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছিল, বিতরণ করা এ ঋণের ১৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা খেলাপি হওয়ার যোগ্য, যা মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ। অথচ ২০২১ সাল শেষে ব্যাংকটি খেলাপি দেখিয়েছে ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

ওই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ব্যাংকটি পরিদর্শনে গিয়ে জানতে পারেন, রাজধানীর পান্থপথ, গুলশান, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, খাতুনগঞ্জসহ প্রায় ৪০টি শাখার মাধ্যমে অর্থ বের করে নেওয়া হয়। এসব ঋণের যথাযথ নথিপত্রও ব্যাংকের কাছে নেই। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ বিতরণের অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেদের পরিদর্শনে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সেগুলো শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

১০ বছর আগে কার্যক্রম শুরু করা ব্যাংকটি এখন ইসলামি ধারার ব্যাংক। যাত্রার শুরুতে ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ। এখন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী আহসানুল আলম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

৯৯ রান যোগ করেই শেষ রাজশাহী, রংপুরের বড় জয়জাতীয় ক্রিকেট লিগে তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল রংপুর বিভাগ। জয়ের জন্য চতুর্থ দিন দরকার ছিল রাজশাহীর চার উইকেট। প্রথম সেশনে রাজশাহীর গোলাম কিবরিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। মঙ্গলবার রাজশাহীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০১ রান। কিন্তু আগের দিন ৬২ রান করা রাজশাহী আজ আরও ৯৯ রান যোগ করেই থেমে গেছে। তাতে ১০১ রানের বড় জয় পেয়েছে রংপুর। দলটির জয়ের নায়ক আরিফুল হক। সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার জয়ের সুবাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল রংপুর। লিগের চতুর্থ রাউন্ডে সোমবার ম্যাচের তৃতীয় দিন ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী ৬২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন ছিল আরও ৪ উইকেট। তার পর প্রতিপক্ষকে সহজেই ১৬১ রানে অলআউট করেছে। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন গোলাম কিবরিয়া। ৬৫ বলে খেলেছেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসে সানজামুলের ব্যাট থেকে (২৩) রান। রংপুরের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন আরিফুল হক। তৃতীয় দিনে তার চমৎকার বোলিংয়ে মূলত ম্যাচে ফেরে রংপুর। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের পথটা তিনিই তৈরি করেছেন। পরপর দুই বলে প্রিতম ও ওয়াসিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও কীর্তিটি গড়তে পারেননি। এছাড়া রবিউল হক, আব্দুল গাফফার ও আবু হাসিম প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট নেন। শুরুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল রংপুর। প্রথম ইনিংসে আরিফুলের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৮৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় তারা। আরিফুল ছাড়া দলের সবাই ছিলেন ব্যর্থ। ১৬১ বলে ১০৩ রানে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। রংপুরকে অল্পরানে গুটিয়ে দেওয়ার নায়ক ছিলেন সাব্বির হোসেন। তিনি একাই নেন ছয়টি উইকেট। এরপর রাজশাহী তাদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও রবিউল হকের বোলিংয়ে ১৮৯ রানে থামে দলটির ইনিংস। সাব্বির হোসেন ৪৭ ও ওয়াইসি সিদ্দিকি খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। জবাবে রংপুরের টপ অর্ডার ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেনি। অধিনায়ক আকবর আলী ৭৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাছাড়া তানভীর হায়দার (৪০), মিম মোসাদ্দেক (৩৩), চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান (৩২) রানের ইনিংস খেলেছেন। তাদের অবদানে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬২ রান।