শীতের রোগ নিরাময়ে যে যে খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি

শীতের রোগ নিরাময়ে যে যে খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি

শীতের মৌসুমে ঠাণ্ডাজনিত অনেক ধরণের রোগ বালাই বৃদ্ধি পায়। এসব রোগ নিরাময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন ধরণের ঔষধ সেবন করে থাকন। একটু সতর্ক থাকলে এসব রোগ বালাই থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।

শীতের সময় সর্দি-কাশি, অ্যালার্জি, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে। তাই মীতে আমাদের নিয়মিত খাবারের সাথে কিছু খাবার যোগ করলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এবং অসুস্থতার হারও অনেক কমে আসবে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আসুন জেনে নিই খাবারগুলোর নামঃ

তুলসী পাতাঃ

ফুসফুসের দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, সর্দিজ্বর, চর্মরোগ, কাশি, কুষ্ঠ বক্ষবেদনা ও হাঁপানি কমাতে তুলসী খুবই কার্যকরী। এছাড়া হাম, বসন্ত, কৃমি, ঘামাচি, রক্তে চিনির পরিমাণ হ্রাস, কীটের দংশন, কানব্যথা, ব্রংকাইটিস, আমাশয় ও অজীর্ণে তুলসী দিয়ে তৈরি ওষুধ বিশেষভাবে কার্যকর। তুলসী পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং ব্যথানাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা শুকনো কাশি-সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসায় সাহায্য করে।

আদাঃ

শতাব্দীর পর শতাব্দী থেকে আদা ব্যবহার করা হতো সমস্ত ধরণের রোগ নিরাময়ের জন্য। আদাতে আদা রয়েছে, একটি জৈব-সক্রিয় পদার্থ যা বমি বমি ভাবের লক্ষণগুলি হ্রাস করতে সহায়তা করে। এটি পেশী ব্যথা হ্রাস করতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হ্রাস করে ফিট রাখতেও আদা অনেক সহায়তা করে। সর্দি, কাশি, গলা ব্যথার চিকিৎসায় আদা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। শীতকালে আদা চা পান দারুণ কার্যকর।

হলুদঃ

ভেষজ গুণে ভরা এ মসলাটি রান্না এবং ওষুধের পাশাপাশি রূপচর্চার ক্ষেত্রেও বেশ সুপরিচিত। ঔষধি হিসাবেও যেমন হজমে যাদের সমস্যা আছে তারা অনায়াসে হলুদ খেতে পারেন। মূলত পরিপাক তন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে হজম ক্রিয়া সচল রাখতে সহায়তা করে হলুদ। পাশাপাশি, স্বরভঙ্গ, হৃদরোগ, হাঁপানিসহ স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে হলুদে রয়েছে নানা লুকায়িত গুণাবলি। তাই হলুদ খাবারে যুক্ত করার মাধ্যমে শরীরের ইমিউনিটি আরও বাড়াতে হবে যাতে সব সময় থাকা যায় সুস্থ আর উৎফুল্ল। হলুদে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সর্দি-কাশি এবং ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য করে। এক কাপ পানিতে আদা, এক চা চামচ হলুদ এবং অর্ধেক লেবু দিয়ে পান করুন। সর্দি, কাশিতে এই পানীয় ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

দারুচিনিঃ

দারুচিনিতে সামান্য প্রোটিন  থাকে। দারুচিনি মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে রক্তে কোলস্টেরলের পরিমান প্রায় ১০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। দারুচিনি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কারণ এতে আছে অ্যাসেনশিয়াল অয়েল অ্যান্টি মাইক্রোবায়াল। দারুচিনি টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব ভালো কারণ এটি রক্তে শুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে থাকে। হাড়ের জোড়ায় ব্যাথা হলে  হাল্কা গরম পানিতে ১ চামচ মধু এবং দারুচিনি গুড়ো মেশান এবং যে স্থানে  ব্যাথা সে স্থানে আস্তে আস্তে মালিশ করুন৷  দারুচিনি যে কোনও সংক্রমণ এবং প্রদাহ কমাতে পারে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় নিজেকে সুস্থ রাখতে দারুচিনি খেতে পারেন। এক কাপ পানিতে আদা দিয়ে ফোটান। এতে ১/২ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো ও মধু মিশিয়ে পান করুন।

গোলমরিচঃ

আর্য়ুবেদ মতে, গোল মরিচ কফ ও বায়ুনাশক, রুচি বৃদ্ধি করে, কৃমি নাশ করে। পানিতে এর গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে আমাশয়ে উপকার হয়। দাঁতের রোগের জন্য লবণ ও গোল মরিচ র্চূণ মিশিয়ে দাতঁ মাজলে ভাল হয়। গরম দুধে গোল মরিচ আর চিনি মিশিয়ে খেলে সর্দিকাশি সারে।গোল মরিচ হজমে,জ্বরে,পেটে গ্যাস দূর করতে উপকারী। ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে এই মশলাটি সর্দি, কাশি এবং ফ্লুর বিস্তার প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং রেসপিরেটরি ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। এক কাপ হলুদ দুধে গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। দুধ না খেতে চাইলে চায়ের সঙ্গে গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন।