নতুন সিদ্ধান্ত আসলো শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল নিয়ে

স্রোত স্বাভাবিক অবস্থায় না ফেরা পর্যন্ত শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরিগুলো সক্ষমতার অর্ধেক ভারি যান নিয়ে চলাচল করতে পারবে। নৌ প্রতিমন্ত্রীর বন্ধ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই রাতে আসে নতুন সিদ্ধান্ত। ফেরি চলাচল বন্ধ সমাধান নয় উল্লেখ করে পানি বিশেষজ্ঞরা বলেন, আধুনিক যুগে এমন স্রোত মোকাবিলার সক্ষমতা থাকা জরুরি।

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুট এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। পদ্মা সেতু সুরক্ষার পাশাপাশি ফেরি রুটটিও সচল রাখা জরুরি। কিন্তু ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে চার বার ফেরির ধাক্কা লাগে। সবশেষ সোমবার (৯ আগস্ট) রাতে দুর্ঘটনার পরই মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে জরুরি বৈঠকে বসে নৌ মন্ত্রণালয়। সিদ্ধান্ত হয়, স্রোত না কমা পর্যন্ত পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে ভারি যানবাহী নিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার বিকালে বৈঠকে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতুতে কিছু হলে আমাদের বুকে আঘাত লাগে। স্রোত স্বাভাবিক অবস্থায় না ফেরা পর্যন্ত শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পরই মঙ্গলবার রাতে তা পরিবর্তন করে ফেরিগুলোর সক্ষমতার অর্ধেক করে যান পারাপারের সিদ্ধান্ত হয়।
বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেন, আগে একটি ফেরিতে ১০টা ট্রাক উঠত এখন ৫টা তোলা হলে হবে, এর সঙ্গে হালকা যানবাহন থাকবে। তাহলে মাস্টারের ফেরি ঘোরাতে কম কষ্ট হবে।  প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষা আসবে, পদ্মায় থাকবে প্রবল স্রোত। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি থাকাটা স্বাভাবিক। আর এবার ভরা বর্ষায় অন্যান্যবারের তুলনায় পানি এবং স্রোত কম থাকা সত্ত্বেও এমন চ্যালেঞ্জ কেন হচ্ছে? পানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আধুনিক যুগে এমন স্রোত মোকাবিলার সক্ষমতা থাকা জরুরি। পানি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, কোনো অবস্থাতেই ৪০০ ফুটের জায়গাতে ৫০ ফুটের ফেরি ধাক্কা খাওয়া ঠিক নয়। সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। এটাই হচ্ছে সমাধান।
গত ২৩ জুলাই ফেরি শাহজালালের ধাক্কার ঘটনায় তদন্ত কমিটির দেয়া রিপোর্টে তিন সুপারিশের একটি শিমুলিয়া ফেরিঘাট আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে মাওয়া অথবা মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ৮ কিলোমিটার ভাটিতে শরীয়তপুরের মাঝিকান্দিতে সরিয়ে নেয়া। মাত্র ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাওয়ায় ঘাট স্থানান্তর হলে দূরত্ব কমবে ২ কিলোমিটার এতে সময় এবং জ্বালানি খরচ কমবে ১৫ শতাংশ করে। অন্যদিকে মাঝিকান্দিতে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে ঘাট স্থানান্তরের দূরত্ব কমবে ৩ কিলোমিটার। তবে সড়ক পথ বাড়বে ৪ কিলোমিটার। পারাপার স্বাভাবিক রাখতে আগে থেকেই শিমুলিয়া ঘাট কিংবা বাংলাবাজার ঘাট সরিয়ে নেয়া গেলে নির্মাণাধীন স্বপ্নের সেতু এড়িয়ে চলাচল করা যেত বলে মনে করেন এ রুটে চলাচলকারীরা।
এ রুটে ১৭টি ফেরির মধ্য চলাচল করছে ৬টি, আর ৮৭ টি লঞ্চই সচল রয়েছে। পদ্মায় প্রতি সেকেন্ড স্রোতের গতি এখন ২ দশমিক তিন মিটার। গত বছর এ দিনে স্রোতের গতি ছিল ৩ দশমিক এক মিটার। আর পানির লেভেল এবার প্রায় দুই মিটার কম।