রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার (ইউপি) চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার (ইউপি) চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আবুল বাশার। তিনি বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম ২০১৬ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথমবার তিনি নৌকার প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয়বার তিনি নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৮ সেপ্টেম্বর জিআরের ৬ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে বিতরণ করেন। এর মধ্যে ইউনিয়নের ১৯৬ জনের মধ্যে ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেন। সেখানে প্রত্যেকের মধ্যে ২০ কেজি করে কম চাল বিতরণ করা হয়। বাকি ২ দশমিক ৫ মেট্রিক টন চাল ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে তিনি তাঁর গাড়িচালকের মাধ্যমে ১ হাজার ৭০০ কেজি চাল বিক্রি করেন। এই চালের মূল্য আনুমানিক ৬৮ হাজার টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১ আগস্ট ইউপি সদস্য কামরুজ্জামানকে মাদক মামলায় জামিন পেতে তাঁর মাকে মৃত দেখিয়ে মৃত্যুসনদ দেন রিয়াজুল ইসলাম। পরে এ বিষয়ে জানাজানি হলে ২০ দিন পর পুনরায় জীবিত থাকার সনদ দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান রিয়াজুল ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১২ জন ইউপি সদস্যের ৩৫ মাসের বেতন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

ইউপি সদস্যরা জানান, চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এলাকায় ভুয়া দলিল করে পুকুর দখলের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে সেখানকার কৃষকেরা মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় কৃষিজমিতে জোর করে পুকুর খননের অভিযোগ আছে। তাঁর বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলাও রয়েছে।

ইউপি সদস্য আবুল বাশার বলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে চাল আত্মসাৎসহ অন্যান্য অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর জানিয়েছেন। খুব শিগগির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তাঁরা অনাস্থা আনবেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আসা চাল আত্মসাতের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি সব চাল বিতরণ করেছেন। ইউপি সদস্যরা তাঁর কাছে না এসে নানা জায়গায় অভিযোগ দিচ্ছেন।

জামিনের জন্য ইউপি সদস্যের মাকে মৃত ও জীবিত দেখানোর সনদের বিষয়ে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, প্রথমবার কে বা কারা তাঁর সই ব্যবহার করে ওই সনদ দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ এলে তিনি জীবিত থাকার একটি সদন দেন। প্রথমবার সনদ তিনি দেননি। ৩৫ মাসের বেতন-ভাতা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে রাজস্বই আদায় হয় না। কীভাবে তাঁদের বেতন–ভাতা দেওয়া হবে। প্রতি মাসেই জেলা প্রশাসক থেকে তাঁদের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হয়। সেখানে আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। তাঁরা মূলত তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।