রাজশাহীর দুর্গম পদ্মার চরে বিদ্যুতের আলো

রাজশাহীর দুর্গম পদ্মার চরে বিদ্যুতের আলো

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার দুর্গম চরের মানুষ কখনো ভাবেনি বাড়িতে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে। প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। দুই বছর আগে যেটা চরের মানুষের দিবাস্বপ্ন মনে হয়েছে, এখন সেটা বাস্তবায়ন হয়েছে। চরের মানুষকে আর হারিকেন-কুপি ব্যবহার করতে হয় না।

জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে পদ্মা নদী। ২০১২ সালে ১৫টি চর নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন গঠন করা হয়। ২০১৪ সালে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ৪ জুন প্রথম নির্বাচন হয়। ২০১৯ সালে ৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে দুর্গম চরে নিয়ে যাওয়া হয় বিদ্যুৎ লাইন। বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় রয়েছে।

গড়গড়ি ইউনিয়ন ভেঙে পদ্মার নদীর চরে ৪৬ দশমিক ৪৭২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে চকরাজাপুর ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। পদ্মার ওপারে গড়গড়ি ইউনিয়ন আলাদা রয়ে গেছে। এ ইউনিয়নে জনসংখ্যা ২০ হাজার ৪৭২ জন। এরমধ্যে ভোটার সংখ্যা আট হাজার ৩৭৬ জন। এর মধ্যে পরুষ ৪ হাজার ২৬৪ ও নারী চার হাজার ১৩০ জন।

পদ্মার চরে ২০০৬ সালে সন্ত্রাসী বাহিনীর উত্থান ঘটেছিল। ওই সময়ে সন্ত্রাসীর হাতে ৪১ জন মানুষ খুন হন। ওই চরের মাটিতে পা দিতে গা ছমছম করত। বর্তমানে চরে সন্ত্রাসী বাহিনীর তৎপরতা নেই।

পলাশী ফতেপুর চরের জাহিদুল ইসলাম সরকার স্বপন বলেন, ২০০৬ সালের ১৯ এপ্রিল পদ্মার চরে সন্ত্রাসীদের হাতে আমার পরিবারের তিনজনকে হারিয়েছি। ওই সময়ে সন্ত্রাসীরা এক বোবা মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল। ধর্ষণের বিচার দাবি করায় আমার পরিবারের তিনজনসহ দেড় বছরের ব্যবধানে ৪১ জনকে প্রাণ হারাতে হয়েছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, চরে দুটি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দুই বছর আগেও স্কুলের শিক্ষার্থীদের কেউ হারিকেন, আবার কেউ সৌর বিদ্যুতের আলোয় পড়াশোনা করত। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহযোগিতায় বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বিদ্যুতের আলোয় পড়াশোনা করছে। এটা কখনও কল্পনাও করিনি। এ ইউনিয়নে সাড়ে চার কিলোমিটার পাকা রাস্তা হয়েছে। কাঁচা রাস্তা ৪০ কিলোমিটার। চরের সংখ্যা ১৫টি। বাঘা সদরের সঙ্গে চলাচল করতে ৭০০ মিটার রাস্তার ব্যবস্থা হলে আর কোনো কাঁচা রাস্তা থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *