রাজশাহীতে আ.লীগের জনসভার ‘বিশেষ ট্রেন’ থেকে পড়ে একজনের মৃত্যু

রাজশাহীতে আ.লীগের জনসভার ‘বিশেষ ট্রেন’ থেকে পড়ে একজনের মৃত্যু

রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভায় যাতায়াতের ‘বিশেষ ট্রেন’ থেকে পড়ে আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার দুপুরে মুসা সরকার (৪০) নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

মুসা সরকারের বাড়ি নাটোর সদরের কেশবপুর এলাকায়। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন এলাকায় ট্রেন থেকে পড়ে আহত হওয়ার পর তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।

রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে গতকাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যাতায়াতের জন্য পশ্চিমাঞ্চল রেলের আটটি ট্রেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভাড়া করা হয়েছিল। এর একটি ট্রেন নাটোর থেকে এসেছিল। এই ট্রেনে মুসা গতকাল সকালে জনসভায় এসেছিলেন। সন্ধ্যার পরে এই ট্রেনে ফিরে যাওয়ার সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনের পাশে ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যান।

ট্রেন থেকে পড়ার খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন মুসা সরকারের ভাই ইসরাফিল সরকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই কৃষিকাজ করেন। সেভাবে রাজনীতি করেন না। এমনি দল সমর্থন করেন। বাড়িতে ছিলেন বলেই জনসভায় এসেছিলেন।

ট্রেন থেকে পড়ার পর মুসা সরকারকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দুই শিক্ষার্থী উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এই দুই ছাত্রের একজন উৎপল চন্দ্র পাল বলেন, সন্ধ্যার একটু পর তিনি ও সহপাঠী আশরাফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনের দিকে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তাঁরা দেখতে পান জনসভাফেরত নাটোরগামী বিশেষ ট্রেনের ছাদ থেকে এক ব্যক্তি পড়ে যান। তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাঁর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তাঁরা ওই ব্যক্তির মুঠোফোন নিয়ে সর্বশেষ কথা বলা একটি নম্বরে ফোন দিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হন।

উৎপল চন্দ্র বলেন, মুসা সরকারকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা অবস্থা দেখে আইসিইউতে নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। আশরাফুল ইসলাম এক ব্যাগ দিয়েছেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে উৎপল আরেক ব্যাগ রক্ত দেন। খবর পেয়ে মুসার ভাই ও বোন আসেন।

হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ চিকিৎসক আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। রাতে তিনি জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে ছিলেন। আজ বেলা একটার দিকে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে মৃত ঘোষণা করা হয়।