মাদ্রাসার খাদেমকে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়েছেন ইউপি সদস্য

মাদ্রাসার খাদেমকে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়েছেন  ইউপি সদস্য

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে চুরির অভিযোগে মাদ্রাসার খাদেমকে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছেন ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা। ইউপি সদস্যের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, শনিবার দুপুরে সোহাগদল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামরুল ইসলাম খোকন ও তার সহযোগীরা উত্তর পশ্চিম সোহাগদল বায়তুন নুর জামে মসজিদের ইলেকট্রনিক্স মালামাল চুরির অভিযোগ এনে ইন্দেরহাট বন্দর থেকে মো. জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ইউপি সদস্য খোকন ও তার সহযোগীরা জহিরুল ইসলামকে বেঁধে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে পেটাতে থাকে। এ সময় জহিরুল ইসলাম চিৎকার দিয়ে বলতে থাকেন, আমাকে মারেন কেন, আমাকে মারবেন না, আইনের লোক আছে, প্রয়োজনে তাদের হাতে তুলে দিন, আপনারা আমার মোবাইল ও জিনিসপত্র সব নিয়ে গেছেন, আমি অসুস্থ আমাকে মাইরেন না। এ সময় সহযোগীদের মধ্যে একজন পায়ের নিচে পেটানোর নির্দেশ দেয়। ঘটনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি বলে উঠেন লোকটাকে কি মেরে ফেলবে। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জহিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ইউপি সদস্য খোকন বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। রোববার সকালে জহিরকে ওই মামলায় পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে জহিরকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়।

জহিরুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী ঝালকাঠী উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তিনি ঝালকাঠী জেলার হদুয়া বৈশাখিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার একজন খাদেম বলে জানান ওই মাদ্রাসার অপর খাদেম সাইদুল ইসলাম।

এ বিষয়ে খোকনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, সাংবাদিকের কাছে আমি জবাব দিতে বাধ্য নই। আমি একজন জনপ্রতিনিধি, আমাকে ইজ্জত দিয়ে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ সার্কেল) মো. রিয়াজ হোসেন (পিপিএম) বলেন, ভিডিও দেখেছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। কোনো ব্যক্তিকে এভাবে মারার অধিকার কারো নেই। এ ব্যাপারে ওসি ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বিস্তারিত জানার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।