ভোট দিয়ে যা বললেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট

ভোট দিয়ে যা বললেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। রোববার (১৪ মে) দেশটির জনগণ প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদুলু এ খবর দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্তান্বুলের উস্কুদার জেলায় ভোট দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এ সময় এরদোগান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো সমস্যা ছাড়াই সারাদেশে ভোট প্রক্রিয়া চলছে। ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চলেও আমাদের নাগরিকরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিচ্ছেন। আমরা ওইসব অঞ্চলেও কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি।’

তুর্কি সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ সময় তুর্কি নেতা নিজের দেশ এবং তুরস্কের গণতন্ত্রের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত কামনা করেন।

এ ছাড়া এরদোগান সব নাগরিককে কোনো উদ্বেগ ছাড়াই তাদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তুর্কি গণতন্ত্রের শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

আনাদুলু জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ ভোটার ভোট দিতে শুরু করেছেন।

খবরে বলা হয়েছে, এ বছর দেশটিতে ৬৪ দশমিক ১ মিলিয়নেরও বেশি লোক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এর মধ্যে প্রবাসে থাকা ১ দশমিক ৭৬ মিলিয়নেরও বেশি ভোটার ইতোমধ্যে তাদের ভোট দিয়ে ফেলেছেন। তুরস্কের এই নির্বাচনে নতুন ভোটার ৪ দশমিক ৯ মিলিয়নের বেশি। আর এই নতুন ভোটাররাই দেশটির এবারের নির্বাচনে ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আনাদুলু জানিয়েছে, সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে তুরস্কের নির্বাচন কমিশন সারা দেশে ভোটারদের জন্য মোট ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।

প্রত্যেক ভোটার দুটি ভোট দেবেন। এর একটি প্রেসিডেন্ট এবং অন্যটি সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য। উভয়েরই মেয়াদ পাঁচ বছর।

প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন- প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, যিনি পুনঃনির্বাচন হতে চাইছেন, প্রধান বিরোধী প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লু এবং সিনান ওগান। এই পদের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররেম ইনসে বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল এবং ১৫০টিরও বেশি স্বতন্ত্র সংসদীয় প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তবে নির্বাচনে পাঁচটি বহুদলীয় ব্লক তথা জোট রয়েছে। সেগুলো হলো- পিপলস অ্যালায়েন্স, নেশন অ্যালায়েন্স, অ্যান্সেস্ট্রাল অ্যালায়েন্স, লেবার অ্যান্ড ফ্রিডম অ্যালায়েন্স এবং ইউনিয়ন অব সোশ্যালিস্ট ফোর্সেস অ্যালায়েন্স৷

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে- দেশটির চলমান উন্নয়ন ও প্রভাব অব্যাহত থাকবে, নাকি তা নতুন অবস্থার দিকে মোড় নিবে। অর্থাৎ বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান পুনঃনির্বাচিত হলে দেশটির উন্নয়ন এবং একটি মুসলিম দেশ হিসেবে বর্তমান বিশ্বে প্রভাব বিস্তারের ধারা অব্যাহত থাকবে।

বিপরীতে প্রধান বিরোধী নেতা কামাল কিলিকদারোগ্লু নির্বাচিত হলে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চলা ইসলামিক ধারা ধর্মনিরপেক্ষ রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। সেই সঙ্গে টানা দুই দশকের শাসনে এরদোগান তুরস্ককে বিশ্ব দরবারে যে প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন, সেখানেও ছেদ পড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *