ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না মেলায় ও দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমের অজুহাতে আবারো এক রাতের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ টাকা করে। শুক্রবার (২ জুন) যে পেঁয়াজ ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল সেই পেঁয়াজ শনিবার (৩ জুন) ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। অবিলম্বে যেন পেঁয়াজের দাম কমে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তারা।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা আমেনা বেগম বলেন, আমাদের আর বলার ভাষা নেই আর বলেই বা কি লাভ কোনো কিছুর দাম তো কমছে না। ঈদের আগে যে পেঁয়াজের দাম ছিল ঈদের পরে সেই পেঁয়াজের দাম দ্বিগুনের বেশী হয়ে গেছে। বর্তমানে এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যে রাত পোহালেই যেন পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।
তিনি বলেন, শুক্রবার (২ জুন) যে পেঁয়াজ ৭২ টাকা ছিল আজ সেই পেঁয়াজ কেজিতে ৮ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা হয়ে গেছে। এতে করে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য চরম সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। বাজার করার জন্য টাকা নিয়ে আসছি এক হিসেব করে আর বাজারে এসে সেই হিসেব মিলছে না। কুরবানীর ঈদ আসতে আসতে আরো যে পেঁয়াজের দাম কি হয় সেই নিয়ে দুশ্চিন্তা আরো বাড়ছে।
এদিকে হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শাকিল খান বলেন, দেশে পেঁয়াজের বাজার উর্দ্ধমুখী হয়ে উঠলে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কথা বলেছিলেন। এতে করে যারা পেঁয়াজ স্টক করে রেখেছিলেন তারা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলে দাম কমে লোকশানের আশংকায় পেঁয়াজগুলো ছেড়ে দিয়েছিলেন। এতে করে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গিয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়নি। এর উপর দেশীয় যে পেঁয়াজ ছিল সেগুলোর সরবরাহ কমে আসছে। সেই সঙ্গে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছে যারা কিনা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু না হওয়ায় দেশীয় পেঁয়াজ মুজদ করে রেখেছেন। যার কারণে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের বাজার খানিকটা বাড়তি রাত পোহালেই দাম বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে যে পেঁয়াজ ২৩শ থেকে ২৪শ টাকা মণ কিনেছিলাম গতকাল দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে আমরা সেই পেঁয়াজ কিনেছি ২৭শ থেকে ২৮শ টাকা মণ দরে। আজ আবার সেই পেঁয়াজ আরো দাম বেড়ে ৩হাজার থেকে ৩২শ টাকা মণ কিনতে হচ্ছে মোকামে। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে যার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। যদি এই অবস্থায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হয় তাহলে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়বে বলে মোকামের আড়তদাররা আমাদের জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত দেশীয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করতে ও পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পত্র (আইপি) দেয়া বন্ধ করে রেখেছে সরকার। এতে করে ১৬ মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।