বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি চাই, আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক। এই দেশ আর পেছনে ফিরে যাবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে যে পদক্ষেপ নিয়েছি, তাতে এই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’
আজ রোববার দুপুরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৩তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ চালু করেছি। মেট্রোরেল চালু হয়েছে। পাতালরেল চালু হবে। কর্ণফুলী নদীতে টানেল করে দিচ্ছি। পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নে করে দিয়েছি। আর এসব স্থাপনায় আনসার বাহিনী বিশেষভাবে জড়িত ছিল। আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় একটি উন্নত–সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

দেশের সব অনাবাদি জমিকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতির ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি হয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। তার সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শুধু আমাদের দেশ নয়, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা গেছে। আমাদের এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। আমাদের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যত অনাবাদি জমি আছে, সব আবাদ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমাদের আনসার বাহিনী, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। গ্রামের লোকজনকে শেখানো, তাদের দিয়ে কাজ করানো, ফসল উৎপাদন করা ও সেগুলো সংরক্ষণ করা বিষয়ে আপনারা অবদান রাখতে পারেন।’

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কুচকাওয়াজে মুগ্ধতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এই বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন গ্রেডে উন্নত করা এবং বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বিশেষায়িত গ্রেড ও নতুন ব্যাটালিয়ন দল গঠন করে দিয়েছি। বেতন বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইউনিয়ন ব্যাটালিয়নদের মাসিক সম্মানী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। সাধারণ আনসার সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধি ও নতুন রেশনসামগ্রী সংযোজন করা হয়েছে। হিল আনসারদের স্থায়ীকরণের কার্যক্রমও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আধুনিক সুবিধাসংবলিত ২৭টি উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন অফিস ভবন নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নয়টির কাজ শেষ হয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের আনসার বাহিনী যেন চলতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।’

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে বাহিনীর কর্মকর্তা, ব্যাটালিয়ন আনসার, সাধারণ আনসার, ভিডিপি-টিডিপি সদস্যদের সমন্বয়ে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক এবং বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট মো. ফখরুল আলম। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, কূটনীতিক, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্য আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজের পাশাপাশি বুদ্ধিমত্তা, একনিষ্ঠতা, সততা, দূরদর্শিতা, মমত্ববোধ প্রভৃতির দৃষ্টান্তপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অনুষ্ঠানে ৮টি ক্যাটাগরিতে ১৮০ জনকে সাহসিকতা ও সেবা পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আনসার ভিডিপি একাডেমির সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম জানান, অনুষ্ঠান শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবিকে ভিত্তি ধরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘স্বাধীনতার পথে’, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল ১২ জন আনসার সদস্যের ‘গার্ড অব অনার’ প্রদানের ভাস্কর্য এবং একাডেমির মূল ফটকের দুই পাশে নির্মিত ম্যুরাল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।