বিশেষজ্ঞদের অভিমত; মার্কিন ভিসানীতির প্রয়োগ বাড়বে

বিশেষজ্ঞদের অভিমত; মার্কিন ভিসানীতির প্রয়োগ বাড়বে

বিরাজমান রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতার কারণে সংশ্লিষ্ট অনেকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি আরোপ হতে পারে। সহিংসতা বাড়লে এর প্রয়োগও বাড়তে পারে। কেননা, ভিসানীতিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্র বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। বুধবার এ প্রসঙ্গে যুগান্তরের কাছে মতামত জানাতে গিয়ে কয়েকজন বিশ্লেষক এমন মন্তব্য করেন। তারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু রাজনৈতিক সহিংসতা নয়, যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের অনেক কিছুই মনিটরিং করছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই প্রধান দলের রাজপথের কর্মসূচি ক্রমেই সহিংস হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বিশ্লেষকদের অনেকে আশঙ্কা করছেন, থামার কোনো লক্ষণ তারা দেখছেন না। বরং সামনের দিনগুলোতে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।

বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে জড়িতদের ওপর মার্কিন ভিসানীতির প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কতটুকু জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে বলেন, এখন ওপেন সোর্স থেকেই অনেক তথ্য পাওয়া যায়। এখানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস আছে, তাদের বিভিন্ন সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানও আছে, যারা একসঙ্গে মিলে কাজ করে। এছাড়া পত্রপত্রিকায় খবরা-খবর আসে। যেখানে অনেক তথ্য থাকে। সেগুলো তারা ব্যবহার করবে, তাদের নিজস্ব ইনফরমেশন সোর্স আছে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারে। কে মারছে, কি করছে, কি বলছে-এগুলো বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আসে। তবে আন্দাজ থেকে বলতে পারি, তারা অনেক কিছুই মনিটরিং করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, মার্কিন ভিসানীতিতে যা বলা হয়েছে সেটি কার্যকরী হতে পারে পরিচিত চেহারার ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, আজকাল ভিসা দেওয়ার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যক্রমও কিন্তু দেখা হয়। যিনি ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তার ফুটেজ বা ফটো চাওয়া হলে যদি দেখা যায় তিনি ওই রকম কোনো মারামারি বা হিংস্র কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাহলে তো এই ভিসানীতির আওতায় যে পড়বেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, মঙ্গলবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে সহিংসতা ও মারামারি হয়েছে সেটা থামানো হয়তো সম্ভব নয়। এটা মার্কিনিরাও জানে। তারা চাইলে এসব ঘটনায় হাই প্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর ভিসানীতি আরোপ করতে পারে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সফিউল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, সম্প্রতি ঢাকা সফর করে যাওয়া মার্কিন প্রতিনিধিদলকে প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশীদারত্বমূলক নির্বাচনের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। এখন এটি কতটা সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয় তার ওপর নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো।

তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে এরকম ভিসানীতি আসলে এটাই প্রথম। এটা অনেকটা পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হয়েছে মনে হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *