বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য তথ্য নিচ্ছে জেলা প্রশাসন

বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য তথ্য নিচ্ছে জেলা প্রশাসন

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চারদিন আগেও লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন। আজ নিঃস্ব। সরকারি সহায়তার জন্য তথ্য দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। নিজের কাছে ছোট মনে হচ্ছে, লজ্জাও লাগছে। তবুও নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কথা হয় গুলিস্তান মার্কেটের ফাহাদ ফাহিম গার্মেন্টসের মালিক ফাহাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার তিনটি দোকান ছিল, গোডাউন ছিল। দোকানগুলো মাঝের দিকে হওয়ায় কোনো মালামাল বের করতে পারিনি। তিন দোকানের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাল (টি-শার্ট) পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকানের চিহ্নটুকুও নাই। আজ আমি নিঃস্ব।

একে (আব্দুল কুদ্দুস) ফ্যাশনের মালিক রিয়াদ হোসেন টিটু বলেন, আমার তিনটি দোকান এবং বড় একটি গোডাউন ছিল। ৫০ লাখ টাকার বেশি জ্যাকেট, ট্রাউজার আর রেইনকোট ছিল। আমি একটি মালও আনতে পারিনি। আগুনের খবর পেয়ে যখন আসি তৎক্ষণে সব পুড়ে ছাই। আজ জেলা প্রশাসনের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি, জানি না কতটা সহায়তা করবে। আমরা চাই মার্কেট চালু করা হোক। আজ লাইনে দাঁড়াতে নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে। লাখপতি থেকে একেবারে শূন্য।

b fires

এসব বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কথা হলো জান্নাত গার্মেন্টসের মালিক কবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক কোটি টাকার মাল ঢুকেছে আগের রাতে, সকাল হতে না হতেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আমার এক্সপোর্ট কোয়ালিটি জ্যাকেট ছিল সব। সব মিলিয়ে আমার ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার মালামাল পুড়েছে। জানি এত পরিমাণ সহায়তা কেউ দিতে পারবে না। তবে সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, ব্যবসা করার সুযোগটা আবার দিন। আমরা ব্যবসা করে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চাই।

এদিন ব্যবসায়ীরা নিজ দোকানের নাম, জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া ফরম, জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স এবং দোকানের নাম বা দোকানের ভিজিটিং কার্ড এনেছেন অনেকেই। কারো কারো ট্রেড লাইসেন্স দোকানেই পুড়ে গেছে। তারা শুধু দোকানের ভিজিটিং কার্ড নিয়ে এসেছেন।

সকাল ৯টা ২০ মিনিটোর দিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসেন। সুশৃঙ্খল লাইনের ব্যবস্থা করতে সহযোগিতা করছেন পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ৫০টি ইউনিট কাজ করে। তাদের সহায়তায় যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীসহ প্রায় সবগুলো বাহিনীর সদস্যরা। তবে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা ধরে জ্বলা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সবকিছু।