রাজশাহীতে পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের, ১১ খেলোয়াড় গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের, ১১ খেলোয়াড় গ্রেপ্তার

পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসে অংশ নেয়া ১১ খেলোয়াড় এবং কোচকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ রাজশাহী থানা। রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী রেল স্টেশনে মারধরের এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় আহত পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়াকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া রাজশাহী রেলওয়ে থানায় মোট ১৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন রাজশাহী মহানগরীর পাঁচানি মাঠ এলাকার আলী আজম (১৯), হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার আকাশ আলী মোহন (২০), একই এলাকার আব্দুল আল জাহিদ (১৬), জিন্নানগর এলাকায় আহসান কবীর (৪৫), নিউ কলোনি এলাকার ফারহানা খন্দকার (১৭), কয়েরদাঁড়া এলাকার রিমি খানম (১৭), জেলার মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট এলাকার খাদিজা খাতুন (১৮), রাজশাহী মহানগরীর বখতিয়ারবাদ মালদা কলোনি এলাকার পাপিয়া সারোয়ার পূর্ণিমা (১৯), ছোটবনগ্রাম উত্তরপাড়ার দিপালী (১৯), বড় বনগ্রাম রায়পাড়া এলাকার সাবরিনা আক্তার (১৯), একই এলাকার জেমি আক্তার (১৪), মহানগরীর শাহ মখদুম থানার মোড় এলাকার বৃষ্টি মণি (১৬) এবং হাজরাপুকুর ডাবতলা এলাকার রমজান (১৯)। এদের মধ্যে রমজান ছাড়া বাকি সবাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি ১২ জনকে রাতে আদালতে নেয়া হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, সকাল ছয়টার ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজিয়া সুলতানা জয়া তার স্বামী পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় রাজিয়া সুলতানা এবং তার স্বামী ট্রেন থেকে নামার জন্য দরজার কাছে আসেন। কিন্তু খেলোয়াড়রা জটলা পাকিয়ে দরজা ঘিরে রেখেছিলেন। রাজিয়া এবং তার স্বামী সেখান থেকে তাদের সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা এ দম্পতির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এর জের ধরে খেলোয়াড়রা পুলিশ কনস্টেবল এবং তার স্ত্রী রাজিয়াকে বেদম মারধর করেন। তাদের মারধরে পুলিশ কনস্টেবলের মুখ, পিঠ এবং অণ্ডকোষে আঘাতপ্রাপ্ত হন বলে অভিযোগ। এ সময় পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়াকেও মারধর করা হয়। তবে পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়া বেশি আহত হয়েছেন। তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খেলোয়াড়দের পরিবার বলছে, প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন ধরনের। ট্রেনে তারা তাদের লাগেজ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তা খুঁজতে গিয়েই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কাজ করা কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে মীমাংসার কথা বলে তাদের রেলওয়ে থানায় নেয়া হয়। রাজশাহী রেলওয়ে থানায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ কারণে প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে, সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। এ ব্যাপারে পাকশী রেলওয়ে জেলার রাজশাহী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল কুমার জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী একটি মামলা করেছেন। ১৩ জন এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি একজনকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিরা জাতীয় যুব গেমসে অংশ নিয়ে রাজশাহী ফিরছিলেন। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *