পরিণয়ে রূপ দিতে হলে নেইমারকে জিততে হবে বিশ্বকাপ

পরিণয়ে রূপ দিতে হলে নেইমারকে জিততে হবে বিশ্বকাপ

ফুটবলের সঙ্গে নেইমারের প্রেম সেই শৈশব থেকে। নেইমার নিজেই তো বলেছেন, ফুটবলবিশ্বের সবচেয়ে ঈর্ষাপরায়ণ মেয়ে, বঞ্চিত হলে সেও করবে পাল্টা আঘাত!

আজ সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করবে ব্রাজিল। পরীক্ষা শুরু হবে নেইমারের। সাফল্য, ব্যর্থতার হিসাব অবশ্য তোলা থাকবে সময়ের হাতে। কিন্তু নেইমার জানেন, বিশ্বকাপ জয়ের মধ্যে লুকিয়ে তার ফুটবল প্রেমের সফল পরিণতি।

এশিয়া থেকে সবশেষ শিরোপা নিয়ে ঘরে ফেরা ব্রাজিলের; সেই ২০০২ সালে কোরিয়া-জাপানের আসরে। ২০০৬-এ ‘দা ফেনোমেনোন’ রোনালদো-রোনালদিনহোরা পারেননি সাফল্যের রাশ টেনে নিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার পরের আসরে রবিনিয়ো-ফাবিয়ানোরা ব্যর্থ। ২০১৪ সালে ব্রাজিল সাওয়ার হলো নেইমারের কাঁধে।

ফুটবল  ও নেইমার জুটির তখন দারুণ সুসময়। ফরতালেজায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্যন্ত সব কিছু চলছিল ঠিকঠাক।

ফুটবলের সঙ্গে তার প্রেম ফের জমে উঠেছে। পিএসজির হয়ে দারুণ ছন্দে আছেন ৩০ বছর বয়সি এ ফরোয়ার্ড। চলতি মৌসুমে খেলা ২০ ম্যাচে ১৫ গোল, ১২টি অ্যাসিস্ট। মানে স্কোরিংয়ের পাশাপাশি আক্রমণের সুরও বেঁধে দিচ্ছেন নিয়মিত। পিএসজি সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে ‘বাহাসের প্রসঙ্গ’ বাদ দিলে সব কিছু আছে ঠিকঠাক।

ফুটবলের প্রতি তার নিবেদন, নিষ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন নেই। সুন্দর ফুটবলের সুর তার প্রতিটি মুভে, ড্রিবলিংয়ে, পাসে, শটে— এমনকি হেডেও। যদিও প্রতিপক্ষের আলতো ট্যাকলে লুটিয়ে পড়ার কারণে অনেকে কটাক্ষ করে ‘নাটুকে’ বলে, কিন্তু তাকে আটকাতে প্রতিপক্ষের প্রাণান্ত চেষ্টা, ফাউল করার পরিসংখ্যানের খবর হয়তো অনেকে রাখেন না।

২০২২-২৩ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৬৬ ফাউলের শিকার হওয়া খেলোয়াড়টি কিন্তু নেইমার। রাশিয়া বিশ্বকাপে তাকে দমাতে পাঁচ ম্যাচে ফাউল করা হয় ২৬ বার!

এবারের বিশ্বকাপের গল্পটা সাফল্যের রঙ-তুলিতে আঁকতে মুখিয়ে নেইমার। যদিও তিনি নিশ্চুপ, গণমাধ্যম থেকে দূরে। কিন্তু আল আরাবি স্পোর্টস ক্লাবের ভেন্যুতে নেওয়া প্রস্তুতিতে ঠিকই দেখিয়েছেন বল তার কথা শুনছে ‘কিপি-আপি’তে, শট নেওয়ার ও পাস দেওয়ার সময়। ড্রিবলিংয়ের সময় তার পা আর বল যেন গল্প করছে ফিস ফিস করে।

‘প্রেম’ টিকিয়ে রাখতে নেইমারকে এই গল্প চালিয়ে যেতে হবে। পরিণয়ে রূপ দিতে হলে জিততে হবে বিশ্বকাপ।