ডিবি থেকে প্রত্যাহার এডিসি সাকলায়েন

আলোচিত চিত্রনায়িকা পরিমণিকে নিয়ে বাসায় সময় কাটানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিবি থেকে প্রত্যাহার  হয়েছে এডিসি গোলাম মোহাম্মদ সাকলায়েন শিথিলকে। বর্তমানে তাকে পুলিশ অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পশ্চিম বিভাগে পদায়িত করা হয়েছে।

ডিবির দায়িত্বে থাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, যেহেতু একটা অভিযোগ উঠেছে তাই তাকে আমরা সরিয়ে নিয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
এছাড়া গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে এডিসি সাকলায়েনের সরকারি মোবাইল ফোন নম্বরও জমা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, পহেলা আগস্ট রাত আটটার দিকে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে নিয়ে নিজ বাসায় অবস্থান করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম মোহাম্মদ সাকলায়েন। ওই দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রাত আটটার দিকে নিজের হ্যারিয়ার গাড়িতে করে রাজারবাগের মধুমতির ফ্ল্যাটে যান। ওই ভবনের ১০ তলায় সাকলায়েনের সরকারি বাসভবন। সাকলায়েন নিজে নেমে এসে রিসিভ করেন পরীমনিকে।
এর কিছুক্ষণ পর সাকলায়েনের বাসায় প্রবেশ করেন পরীমনির খালাতো বোন ও তার স্বামী। পরে রাত দুইটার দিকে পরীমনিসহ তিনজনই বের হয়ে যান বাসা থেকে।

এ প্রসঙ্গে সিআইডির ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক শনিবার (৭ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পরীমনির সঙ্গে এডিসি গোলাম সাকলায়েনের সম্পর্কের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘পরীমনিকে নিয়ে বাসায় অবস্থান করা অনৈতিক কাজ। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গোলাম মোহাম্মদ সাকলায়েন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের চৌকষ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। ৩০ বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তা নিজ ব্যাচের প্রথম স্থান অধিকারকারী। পেশা জীবনেও অনেক দুর্ধর্ষ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মাদকবিরোধী অভিযানে রয়েছে তার ব্যাপক সাফল্য। পেশাগত কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন পিপিএম পদক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবনেও রেখেছেন কৃতিত্বের সাক্ষর। এ রকম একজন দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তার নৈতিকস্খলেনের বিষয়টি অবাক করেছে তার সহকর্মীদেরও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক তার ব্যাচের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে পেশাজীবন সব জায়গাতেই তাকে অনুকরণীয় মনে করতাম আমরা। পেশা-দক্ষতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সুনজরে দেখতেন তাকে। হয়ত এই সুযোগটাই নিয়েছেন সাকলায়েন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘যেহেতু তদন্ত চলছে তাই বিস্তারিত মন্তব্য করা যাবে না। তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন কাণ্ড পেশাদারিত্ব এবং নৈতিকতা দুই দিক থেকেই গর্হিত।