ডলার সংকটে থমকে গেছে আমদানি-বাণিজ্য, চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয়

ডলার সংকটে থমকে গেছে আমদানি-বাণিজ্য, চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয়

ডলার সংকটে থমকে গেছে আমদানি-বাণিজ্য। বিশেষ করে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে কমে যাবে সরকারি ও বেসরকারি খাতের উৎপাদন। বিশ্ব ব্যাংক এরইমধ্যে কমিয়েছে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনা প্রয়োজন, অন্যথায় সংকট কাটবে না। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মনে করেন, ৬ থেকে ৭ ভাগের মধ্যে থাকবে চলতি অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন। চলতি বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল সাড়ে ৭ শতাংশ।

এদিকে, উন্নয়ন কাজের লাগাম টেনে ধরেছে সরকার। বেসরকারি খাতের উৎপাদনেও তেমন সুখবর নেই। সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে গেলো জানুয়ারিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ ভাগ। কিন্তু এর তিন মাস আগেও আন্তর্জাতিক ঋণদাতা এই সংস্থার প্রক্ষেপণ ছিল ৬ দশমিক ১ ভাগ।

অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের ডলার সংকট তো কাটেনি, এটা আরও বেড়ে গেছে। শিল্প খাতের কাঁচামাল আমদানি যে আস্তে আস্তে কমতেছে, সেটার প্রভাব তো ইতোমধ্যে সেসব শিল্পে পড়তেছে। তাদের ইনভেন্টরি তো শেষ হয়ে যাচ্ছে। এটা তো আর চিরকাল থাকবে না। তাদের এখন কাঁচামাল কিনে আনতে হবে। কিন্তু কেনার জন্য তারা ডলার পাচ্ছেন না। এটা ছোট করে দেখার বিষয় নয়। কিন্তু এজন্য কার্যকর কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটা আমার কাছে বোধগম্য নয়।

সংকটের মধ্যেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের উৎপাদন বাড়বে, রিপোর্টে এমনটি বলছে বিশ্বব্যাংক। মন্দা থেকে যেখানে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে বিশ্ব, সেখানে বাংলাদেশের চিত্র বিপরীত। বলা হচ্ছে, ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিৎ।

ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রক্ষেপণ কমিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তারা অন্য দেশের প্রক্ষেপণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাহলে আমরা কিন্তু উল্টো দিকে যাচ্ছি। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশে ভারতের ক্ষেত্রে তারা এই হার ৭.৫ বলতেছে। আরও বেশিও হতে পারে বলে জানাচ্ছে। এই অবস্থার জন্য আমাদের অভ্যন্তরীণ নীতি দায়ী।

তবে, সরকারের কৃচ্ছতা সাধন এবং বেসরকারি খাতের অনিশ্চয়তার মধ্যেও সম্ভাবনা দেখছে সরকার। বলা হচ্ছে, বাজেটে দেয়া লক্ষ্যের কাছাকাছি অর্জিত হতে পারে প্রবৃদ্ধি।

এম এ মান্নান বলেন, আমাদের লোকসংখ্যার (অভিবাসন) বিদেশ যাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারায় পরিবর্তন এসেছে। রফতানির হাওয়াও ইতিবাচক। ফসলের মাঠেও আমরা ভালো ফলন পেয়েছি। সামনে বোরো আসছে, আশা করছি, ভালো ফলন পাবো। তাই প্রবৃদ্ধির হার ৬ থেকে ৭ ভাগের মধ্যে থাকবে।

উল্লেখ্য, মোট দেশজ উৎপাদন বা প্রবৃদ্ধি না হলে নিশ্চিত হবে না কর্মসংস্থান। বাড়বে বেকারত্বের হার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *