সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন নিয়ে

সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন নিয়ে

কেউ জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করলে ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করতে নতুন আইন করছে সরকার। আইন অনুযায়ী এখন থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে এ নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক।

সোমবার (৯ আগস্ট) অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ লক্ষ্যে এখন থেকে প্রতি বছরের ৬ অক্টোবরকে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস হিসেবে পালন তরা হবে। আগে এ দিনটিকে শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন দিবস হিসেবে পালন করা হতো। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এসডিজি অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষকে নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সরকার এর আগেই লক্ষ্যে পৌঁছাবে। নতুন আইনে সবাইকে জন্ম ও মৃত্যুর দেড় মাসের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। বতর্মানে এ নিবন্ধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ৭৫ টাকা করে ফি নেয়া হয়। গত ৫/৬ মাস ধরে সরকার এটা নিয়ে কাজ করছে। সঠিক নিবন্ধন না থাকায় অনেকে বয়স লুকান। নতুন আইনে সেটা সম্ভব হবে না বলেও জানান সচিব।
এর আগে, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ স্বাক্ষরিত প্রস্তাবে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর প্রতি বছর ৬ অক্টোবরকে ‘জাতীয় জন্ম নিবন্ধন দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে সংশ্লিষ্ট পরিপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ‘ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধনের পাশাপাশি তার মৃত্যুও নিবন্ধিত হওয়া আবশ্যক। টেকসই উন্নয়ন অভিষ্টের (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা ১৬.৯ এবং সূচক ১৭.১৯.২-এ ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম নিবন্ধন এবং ৮০ শতাংশ মৃত্যু নিবন্ধনের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালনের মাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের বিষয়ে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।’
এতে আরও বলা হয়েছিল, ‘জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪ (সংশোধিত ২০১৩)’ এর ধারা ৮ অনুসারে শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন এবং কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে মৃত্যু নিবন্ধন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু জন্ম নিবন্ধনের তুলনায় যথাসময়ে মৃত্যু নিবন্ধনের হার আশানুরূপ নয়। আগামীতে দেশের সকল নাগরিকের জন্য শুদ্ধ তথ্যভাণ্ডার তৈরি করার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে মৃত ব্যক্তির উত্তরসূরিদের মৃত্যু নিবন্ধন ও মৃত্যু সনদের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতার অভাব।’ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪’ এর ১৮ ধারার উপ-ধারা (৩) অনুসারে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু প্রমাণের জন্য মৃত্যু সনদ প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে-
(ক) সাকসেশন সার্টিফিকেট প্রাপ্তি,
(খ) পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তি
(গ) মৃত ব্যক্তির লাইফ ইনস্যুরেন্সের দাবি,
(ঘ) নামজারি এবং জমাভাগ প্রাপ্তি।
‘জাতীয় জন্ম নিবন্ধন দিবস’ এর পরিবর্তে ‘জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উদযাপন করা হলে জন্ম নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু নিবন্ধনের বিষয়ে সার্বিক জনসচেতনতা তৈরি হবে বলে আশাবাদ করা হয়েছিল ওই প্রস্তাবে।