রাজধানীতে গভীর রাতে বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

রাজধানীতে গভীর রাতে বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

রাজধানীতে গভীর রাতে বাসে যাত্রী তুলে ডাকাতি মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। শনিবার (৪ মার্চ) সকালে রাজধানীর ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার সবাই  আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফখরুল কবির শান্ত (২৯), মো. মনির হোসেন (৩০), মো. ইমরান (২২), মো. মুজাহিদ ওরফে বাবু (২৮), মো. রাজিব ওরফে আসিফ (২১) ও মো. সানি (২৬)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রিসাত পরিবহনের একটি বাস যাত্রীসহ খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে বিকালে গাজীপুরের শিববাড়ী পৌঁছায়। সেখান থেকে পরবর্তী ট্রিপের জন্য গাজীপুর হতে নবীনগর যায়। নবীনগর বাস কাউন্টারে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাসটি দারুসসালাম থানাধীন পর্বত সিনেমা হলের ডানপাশে রাস্তার ওপরে রেখে বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার ভিতর থেকে দরজা লক করে বাসের পিছনের ছিটে ঘুমিয়ে পড়ে।

রাত ৩টার দিকে ৮/১০ জনের একটি ডাকাত দল গাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে এখানে কেন গাড়ি পার্কিং করেছে তার কারণ জানতে চায়। ডাকাতদের কথার ভাবগতিতে বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার বশ্যতা স্বীকার করলে ডাকাতদল খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। তখন ডাকাত দলের নেতা গ্রেপ্তারকৃত শান্তর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজারের কাছে মানিব্যাগ-মোবাইল ফোন চায়। তারা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লোহার রড দিয়ে তাদের উপর্যুপরি মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের চোখ ও হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে পিছনের সিটে ফেলে রাখে। ডাকাতদের দলনেতা শান্ত গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর এসে ডাকাত দলের অন্য সদস্য ইমরানকে গাড়ি চালাতে বলে। পরবর্তীতে ডাকাত দলের কয়েকজন নিজেরাই যাত্রী-হেলপার-সুপারভাইজার সেজে গাবতলী-আসাদগেট-নিউমার্কেট-আজিমপুর-যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর হয়ে একই পথে এসে আমিনবাজার-সাভার-চন্দ্রা’র বিভিন্ন স্থান হতে একজন একজন করে লোক তুলে মারধর করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাদের চোখ ও পিছমোড়া করে হাত বেঁধে বাসের পিছনে ফেলে রাখে। ডাকাতদল সারারাত ধরে ডাকাতি করে ভোর ৭টার দিকে আহত যাত্রীসহ বাসটি সাভার থানাধীন কবিরপুরে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।

এরই প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম ছায়াতদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মামলার বাদীসহ অন্য ভিকটিমের বক্তব্য পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত দলটিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ৩ মার্চ অভিযান চালিয়ে ঢাকার মিরপুর-গাবতলী, সাভারের গেন্ডা-রাজপুরে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা পরস্পরের যোগসাজশে যাত্রী সেজে বাসে উঠে বাসের ড্রাইভার- হেলপারকে জিম্মি করে বাসের মধ্যে ডাকাতি সম্পন্ন করে। নিজেরাই যাত্রী-হেলপার-সুপারভাইজার সেজে বিভিন্ন স্থান হতে একজন একজন করে লোক তুলে মারধর করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় একটি ডাকাতি মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র-মাদক মামলা রয়েছে বলে জানান ডিবি প্রধান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *