ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমাল রাশিয়া

ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমাল রাশিয়া

ঘোষণা অনুযায়ী ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমিয়েছে রাশিয়া। ফলে বুধবার (২৭ জুলাই) আগের দিনগুলোর চেয়ে কম গ্যাস পেয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

আগামী দিনগুলোতে সরবরাহ না বাড়লে আসন্ন শীতকালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোকে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গ্যাস সংকটে দিশেহারা পুরো ইউরোপ। গ্যাস নিয়ে রাশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে চলছে রীতিমতো ঠান্ডা যুদ্ধ। আগের দিনই রাশিয়ার বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম এক ঘোষণায় জানায়, রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বুধবার থেকে তারা তাদের মূল পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) গ্যাস সরবরাহ আবারও ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে।

গ্যাজপ্রম আরও জানায়, নর্ডস্ট্রিম-১ পাইপলাইনের আরেকটি টারবাইন বন্ধ করার কারণে গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন ২০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। এতে বর্তমান সরবরাহ অর্ধেক হয়ে যাবে।

এদিকে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কমে আসায় নিজ নিজ দেশে গ্যাসের ব্যবহার কমাতে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় জোটের দেশগুলো। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ব্রাসেলসে ২৭ দেশের জ্বালানিমন্ত্রীদের বৈঠকে আগামী আগস্ট থেকে মার্চ পর্যন্ত গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রস্তাবে একমত হন তারা।

নর্ডস্ট্রিম-১ পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এ পাইপলাইন দিয়ে সক্ষমতার চেয়ে অনেক কম গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে আর চলতি মাসের প্রথম দিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এটি ১০ দিন পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়।

গত বছর রাশিয়া তাদের গ্যাসের ৪০ শতাংশ ইইউকে সরবরাহ করে। কিন্তু এবার রাশিয়া জ্বালানিকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ ইইউর।

জার্মানি বলছে, গ্যাস সরবরাহ সীমিত করার প্রযুক্তিগত কোনো কারণ নেই। অপরদিকে রাশিয়া সতর্ক করে বলেছে, তারা সরবরাহ কমাতে পারে বা পুরোপুরি বন্ধও রাখতে পারে। তাদের এ হুঁশিয়ারির পর সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে আগামী সাত মাস ধরে গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।

এই প্রস্তাব অনুযায়ী ঐচ্ছিক এ লক্ষ্য জরুরি পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক হয়ে উঠতে পারে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লায়িন বলেছেন, রাশিয়া ইইউতে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারে౼এ সম্ভাবনা একটি ‘সম্ভাব্য চিত্র’।

গ্যাজপ্রমের ওই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ ইউরোপের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য গ্যাসযুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া, যা ভাবা হয়েছিল এটা ঠিক তা-ই।’ 

খবর রয়টার্স।