ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যে দেশটির অলভিয়া সমুদ্রবন্দরে আটকা পড়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন-বিএসসির জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৯ নাবিক। বন্দরের ছাড়পত্র না পাওয়া ও সাগরে মাইন পুঁতে রাখায় বের হতে পারছে না জাহাজটি। রাশিয়ার হামলা শুরুর আগে ইউক্রেনের ওই বন্দরে পৌঁছায় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’।
নাবিকদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে চরম আতঙ্কে। এই অবস্থায় উদ্ধার পেতে সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিএসসি’র প্রতি আকুতি জানিয়েছেন আটকে পড়া নাবিকেরা। এই আটকা পড়া নাবিকদের একজন ওমর ফারুক তুহিন, তিনি তার বন্ধুর কাছে পাঠানো বার্তায় নিজেদের অবস্থা তুলে ধরেছেন। তুহিন জানান, রুশ সেনারা সাগরে মাইন পুঁতে রাখায় বন্দর থেকে কোথাও যেতে পারছেন না তারা। সেখানে চারপাশে বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। যেকোনো সময় বোমা বা মিসাইলের আঘাতে তারা প্রাণ হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। ইতোমধ্যেই তাদের আশপাশে থাকা অন্তত পাঁচটি জাহাজ মিসাইল হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। জাহাজে ১০ থেকে ১৫ দিনের খাবার রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই নাবিক।
তার মতো জাহাজে অনেকটাই অবরুদ্ধ জীবন কাটছে ২৯ বাংলাদেশি নাবিকের। জাহাজ নিয়ে এগোনোরও উপায় নেই, কারণ সাগরে পুঁতে রাখা হয়েছে মাইন।
গেলো ২২ ফেব্রুয়ারি, তুরস্কের বন্দর এরেগলি থেকে পণ্য বোঝাই করতে ইউক্রেনের অলিভিয়ায় পৌঁছায় বিএসসির জাহাজ। এরপরই শুরু হয় রাশিয়ার আগ্রাসন। এ অবস্থায় পণ্য বোঝাই না করেই বন্দর ত্যাগ করে আন্তর্জাতিক সমুদ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ দেয়া হয়। তবে, ছাড়পত্র না পাওয়ায় তা আটকা পড়ে জাহাজটি। ইউক্রেনে জাহাজসহ নাবিক আটকে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসসি’র নির্বাহী পরিচালক পিযুষ দত্ত। তিনি জানান, জাহাজটির ক্যাপ্টেনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তারা যেখানে রয়েছেন সেটি কিছুটা সেইফজোন। তবে এই অবস্থায় কী করা যায় তা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছে।
পর্যাপ্ত খাবার ও জ্বালানি মজুদ থাকার কথা জানালেও নাবিকদের উদ্ধারে কি পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট নয় কর্মকর্তাদের বক্তব্যে। ২০১৮ সালে বিএসসির বহরে যোগ দেয়া জাহাজটি বিমার আওতায় রয়েছে বলে জানান বিএসসির কর্মকর্তারা।