আরও বাড়ল ডলারের দাম

আরও বাড়ল ডলারের দাম

রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি। রেমিট্যান্সের গতি কম। ফলে বাড়তি চাহিদার কারণে বাড়ছে মার্কিন ডলারের দাম। এতে করে মান হারাচ্ছে দেশীয় মুদ্রা টাকা।

সবশেষ গত বুধবার (২৩ মার্চ) আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে দাম প্রতি ডলারে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় উঠেছে। তবে খোলাবাজার ও নগদ মূল্যে ডলার আরও বেশি দামে ৯১ থেকে ৯২ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করেও দামের ঊর্ধ্বমুখীর লাগাম টানতে পারছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিক প্রবাসীদের পাঠানো আয় বা রেমিট্যান্স গত তিন মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। আবার প্রত্যাশা অনুযায়ী আসছে না রপ্তানি আয়। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দেশে আমদানির চাপ বেড়েছে। এর দায় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দি‌য়ে‌ছে। এতে করে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম।

এছাড়া করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেকে বিদেশ ভ্রমণ ও যাতায়াত করছেন। দেশে থাকা অনেক প্রবাসী এখন বিদেশে নিজ নিজ কর্মস্থলে চলে যাচ্ছেন। এর কারণে নগদ ডলারের চাহিদা বেশি থাকায় খোলাবাজরেও দাম বাড়ছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকার পর গত আগস্টে হঠাৎ টাকার বিপরীতে বাড়তে শুরু করে ডলারের দাম। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই থেকেই ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল ডলার। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। এরপর ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এরপর গত ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে যায়। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত মঙ্গলবার আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৮৬ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ গত সাড়ে ৭ মাসে প্রতি ডলারে দর বেড়েছে এক টাকা ৪০ পয়সা বা এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর কাছে চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যখন বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বেশি ছিল তখন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন সরবরাহ কমে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে। সবশেষ ২৩ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের চাহিদার বিপরীতে ৩৭৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।