বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক, ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলন নেতাকর্মীদের জন্য পরীক্ষা

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক, ফেব্রুয়ারিতে আন্দোলন নেতাকর্মীদের জন্য পরীক্ষা

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে মত দিয়েছেন নেতারা। কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্তও এসেছে।

বৈঠকের বেশিরভাগ সময়জুড়ে আলোচনা হয়েছে আন্দোলনের গতিপথ নিয়ে। চূড়ান্ত আন্দোলন কী হবে, কখন থেকে শুরু হবে সে বিষয়েও জ্যেষ্ঠ নেতাদের মত নিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এখন পর্যন্ত আন্দোলনের সফলতা নিয়ে খুশি দলটির হাইকমান্ড।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা জানান, ক্ষমতাসীনদের নানা বাধার পরও গত কয়েক মাসে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সফল করেছে বিএনপি। এতে সারাদেশের নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকদের মাঝে চূড়ান্ত আন্দোলনের মানসিকতা তৈরি হয়েছে।
বিগত দিনের মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগের বিভাগীয় গণসমাবেশ এবং ১১ জানুয়ারি গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকার প্রস্তুতি মনোপূত হয়নি।

আগামী দিনে কী কর্মসূচি নেওয়া যায়, সে বিষয়টিও ওঠে বৈঠকে। ঢাকাকে প্রস্তুত করে সরকার পতনের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে যেতে মত দেন নেতারা। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে দলের শীর্ষ নেতা দ্রুত কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন। ২ জানুয়ারি বিএনপির আন্দোলনের ১০ ও রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ আলোচনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনও মার্চে কঠোর আন্দোলনের ইঙ্গিত দেন।

নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সময় বেশি নেই, অপেক্ষা করা যাবে না। আন্দোলনের জন্য ফেব্রুয়ারি, বেশি হলে মার্চের মাঝামাঝি নেতাকর্মীদের জন্য পরীক্ষা।

বিএনপি নেতারা বলেন, মার্চে রোজা শুরু, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ঈদ। এরপর বর্ষাকাল ও কুরবানির ঈদ উদযাপনের মাধ্যমে জুলাই মাস চলে আসবে। এ সময় তেমন কোনো কর্মসূচি পালন করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ নেতা মার্চে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার পক্ষে মত দিয়েছেন।

নেতারা মনে করেন, মার্চে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হতে পারে। ডলারের দাম বাড়তে পারে। ওই সময় গরম বাড়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে চাহিদা মতো জ্বালানি আমদানি করতে না পারলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অবনতি হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকবে। এতে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। তখন জোরালো কর্মসূচি দিলে মানুষের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে আন্দোলন সফল করা যাবে।

চূড়ান্ত আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হয়েছে। তবে আন্দোলনের ফলাফল কবে আসবে সেটা বলতে পারি না। যতক্ষণ পর্যন্ত ফলাফল না হবে, ততক্ষণ চূড়ান্ত আন্দোলন প্রমাণ হয় না। এ আন্দোলনের গতি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে, একসময় সফলতার মুখ দেখবে।