অস্ত্র হাতে কিশোর গ্যাংয়ের ভিডিও ভাইরাল, আটক ৭

অস্ত্র হাতে কিশোর গ্যাংয়ের ভিডিও ভাইরাল, আটক ৭

রাজশাহী নগরীর শাহ মখদুম থানা এলাকায় দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উচিয়ে একদল কিশোরের উল্লাস করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্যকে নগরীর শাহ মখদুম থানা পুলিশ আটক করেছে। বর্তমানে তাদের শাহ মখদুম থানা হেফাজতেই রাখা হয়েছে।

আটকরা হলেন, মো. মাসুমের ছেলে মো. সোহেল রানা (২১), মো. রাজু আহমেদের ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম অপূর্ব (২২), মো. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম সম্রাট (২১), আব্দুর রহিমেরে ছেলে মো. নাজমুস সাকিব আবির (২১), রিপন শেখের ছেলে মোহাইমিনুল শেখ (২০), মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. জিসাদ এবং মো. সালাম হোসেনের ছেলে মো. মারুফ হোসেন। আটকদের বাড়ি নগরীর শাহ মখদুম থানাধীন চকপাড়া দুরুলের মোড় এলাকায়।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (শাহ মখদুম জোন) নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, অস্ত্র হাতে একদল কিশোরের নাচানাচির একটি ভিডিও আমাদের নজরে আসে। এরপর মঙ্গলবার রাতভর ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কিশোর গ্যাংয়ের সাত সদস্যকে আমরা আটক করি। আটককৃত কিশোরদের সবার বয়স ১৮ বছরের উপরে। এসময় ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি কিশোরদের আটকের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাকুসহ নানা ধরনের অনেক অস্ত্র হাতে খোলা আকাশের নিচে একদল কিশোরের উল্লাস করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এই কিশোরদের খোঁজ শুরু করে।

ভিডিওটি ছিল ১৯ সেকেন্ডের। অস্ত্র হাতে তালেবানি কায়দায় একদল কিশোর নাচানাচি আর উল্লাস করছে। সঙ্গে বাদ্যও বাজছে। তালে তালে কিশোররা নাচছে। তাদের হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাকুসহ নানা ধরনের অনেক অস্ত্র। একজন এরই মধ্যে বলছে, ‘এই মাইর‌্যা দিস না রে বাপ’! স্থানীয়রা জানান, তিন দিন আগে গাংপাড়া এলাকার কিশোর গ্যাং সদস্যরা চাঁদাবাজির টাকায় খাওয়া-দাওয়া করে অস্ত্র হাতে নাচানাচি করে শো-ডাউন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। স্থানীয়ভাবে এরা আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহ মখদুম অঞ্চলের উপপুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকী  বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বন্ধে আগে থেকেই রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত মঙ্গলবার যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে তা আজ থেকে পাঁচ মাস আগের। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ বিষয়টি স্বীকার করেছে। সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। যে দুই কিশোর আহত হয়েছিল তারা ভিডিও ভাইরাল হওয়া কিশোর দলের সদস্য। আহত হওয়ার পর নিজেদের অবস্থান জানান দিতে পূর্বের এই ভিডিওটি তারা ভাইরাল করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি আটক হওয়ার কিশোর সবার সাথে কথা বলেছি। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ বছরের উপরে। তারপরও তাদের বয়সের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।