অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালে স্পেনকে হারিয়ে ব্রাজিলের সোনা জয়

টানা দ্বিতীয়বার স্বর্ণপদক জয়ের লক্ষ্যে অলিম্পিক ফুটবলের ফাইনালে শক্তিশালী স্পেনের মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল।ইয়োকোহামার নিশান স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় ম্যাচটি। কোপা আমেরিকা হারিয়ে অলিম্পিকের সোনার মেডেল নিয়ে দুঃখ লাঘব করতে চেয়েছিল ব্রাজিল।

অন্যদিকে ২৯ বছরের খরা কাটাতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের কাছ থেকে সোনা ছিনিয়ে নিতে মরিয়া ছিল স্পেন। দুর্দান্ত লড়াইয়ে খেলা গড়াল ১২০ মিনিট পর্যন্ত। শেষ হাসি ফুটল ব্রাজিলিয়ানদের মুখে। অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে দর্দুান্ত গোল করে জয় এনে দিলেন বদলি খেলোয়াড় ম্যালকম।

২-১ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে টোকিও অলিম্পিকের সোনার পদক নিজেদের করে নিল ব্রাজিল। এ নিয়ে অলিম্পিকের পুরুষ ফুটবল ইভেন্টে টানা দ্বিতীয়বার স্বর্ণপদক পেল ব্রাজিল।

ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটেই ঘটে অঘটন। মাইকেল ওইয়ারজাবালের একটি চেষ্টা রুখে দেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক সান্তোস। কিন্তু তার আগে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজনেই আহত। দৌড়িয়ে ফিজিও এসে দুজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর অনেকটা ছন্দহীন খেলতে থাকে দুই দলই। ঠিক কোন ফরমেশনে খেলছে বোঝা মুশকিল। মিডফিল্ড দখলে দুদলই বেশ সচেষ্ট দেখা গেলে। এভাবে কিছু সময় যাওয়ার পর নবম মিনিটে হঠাৎই স্পেনের রক্ষণে হানা দেন চুনহা। তবে স্পেনের রক্ষণ সে সুযোগ দেয়নি চুনহাকে।

১১তম মিনিটে কুকুরেল্লার ভুলে ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। তবে দানি আলভেস তা কাজে লাগাতে পারেননি। ১৯ মিনিটে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দিচ্ছিল প্রায় ব্রাজিল। কোনোমতে নিজেই সেই বল ঠেকিয়েছিলেন ডগলাস লুইজ। ২০তম মিনিটে স্পেনের খেলোয়াড়কে মারাত্মক ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন অ্যারানা। ২৫ মিনিটে গুইলার্মে আরেনার কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের একেবারে কাছ থেকে শট নেন রিচার্লিসন। এত কাছে থেকে শট নিয়েও বল জালের অনেক বাইরে দিয়ে পাঠান এ ফরোয়ার্ড।

২৬তম মিনিটে ফের ফাউলের বাঁশি। এবার হলুদ কার্ডের খাতায় নাম লেখালেন স্পেনের এরিক গার্সিয়া। ৩২ মিনেটে কুকুরেল্লার পাসে দুর্দান্ত শট নেন মার্কো আসেনসিও। ব্রাজিল গোলরক্ষক সান্তোস তা ঠেকিয়ে দেন। ৩৫তম মিনিটে বল নিয়ে স্টেনের বিপজ্জনক পয়েন্টে পৌঁছে গেলেন চুনহা। গোল বাঁচাতে মরিয়া হয়ে বলে পাঞ্চ করলেন উনাই সিমন। কিন্তু রেফারির বাঁশি। পেনাল্টি ব্রাজিলের পক্ষে। ভিএআর দেখে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।

আর ৩৬তম মিনিটে সেই পেনাল্টি থেকে গোল দিতে পারলেন না রিচার্লিসন। এগিয়ে যেতে পারল না সেলেকাওরা। প্রথমার্ধে অতিরিক্ত তিন মিনিট যোগ করেন রেফারি। আর একেবারে শেষ মুহূর্তে স্পেনের জালে বল জড়িয়ে দিলেন চুনহা। দানি আলভেসের একটি ক্রসকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে দিলেন চুনহা।

ব্রাজিল অধিনায়ক দানি আলভেজের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যখান থেকেই ডান পায়ের দারুণ এক শটে স্পেনের জাল কাঁপিয়ে দেন চুনহা।

১-০ গোলের ব্যবধানে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।

বিরতি থেকে ফেরার পর ৫১তম মিনিটে দারুণ এক প্রচেষ্টা চালান রিচার্লিসন। তার সেই প্রচেষ্টা দুর্দান্তভাব জালের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা করেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমোন।

৬১তম মিনিটে সৌভাগ্যের দুয়ার খুলে স্পেনের। কার্লোস সোলারের ক্রস থেকে বল পেয়ে বক্সের একেবারে বামপ্রান্ত থেকে বাম পায়ের দুর্দান্ত শট নেন ওইয়ারজাবাল। সান্তোসকে ঠিকই পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন রিয়াল সোসিয়াদের এই ফরোয়ার্ড।

১-১ সমতায় ফেরে দুই দল। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া হয় দুই দলেরই। কিন্তু কোনো দলই লিড নিতে পারেনি।

৯০তম মিনিটে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের লুইস। রেফারি আরো চার মিনিট অতিরিক্ত সময় যোগ করেন। কিন্তু তাতেও খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিতই রয়ে যায়। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।