অর্থনৈতিক সংকটেও মাথাপিছু আয় বেড়েছে ২শ’ ডলার

অর্থনৈতিক সংকটেও মাথাপিছু আয় বেড়েছে ২শ’ ডলার

করোনার ধাক্কা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর মূল্যস্ফীতি। সবকিছুর মাঝেও বেড়েছে মাথাপিছু আয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২ ডলার বেশি। যদিও, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের চূড়ান্ত হিসাব বলছে, প্রাক্কলনের চেয়ে ৩১ মার্কিন ডলার কমেছে মোট আয়।

এদিকে, সবশেষ জনশুমারিতে, জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় অর্ধকোটি। তাই প্রকৃত মাথাপিছু আয় আরো কম হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। 

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি তো একটি গড় সংখ্যা। আমরা জানি যে, বাংলাদেশে উপরের দিকের যে ৫ শতাংশ মানুষ এবং নিচের দিকের ৪০ শতাংশ মানুষ রয়েছে তাদের মধ্যে যে পার্থক্য সেটি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। মাথাপিছু আয় সবারই বাড়ছে, তবে এই পার্থক্যের কারণে বৈষম্যও বাড়ছে। 

বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, একদিক থেকে শুধু বৃদ্ধি হলে বা এর সুফল যদি সবাই ভোগ না করতে পারে তবে এটাকে অর্থনীতিতে সবার জন্যে ভাল অবস্থানে আছে সেটা বলা যাবে না।

জিডিপি প্রবৃদ্ধিতেও অর্জিত হয়নি প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা। বিবিএসের তথ্য বলছে, করোনা পরবর্তী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। তবে পরের বছর ঘুরে দাঁড়িয়েছে অনেকটা। বর্তমানে যা ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। অবশ্য, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব কতটা বিজ্ঞানসম্মত, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে অর্থনীতিবিদদের। 

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৭ শতাংশের উপরে প্রবৃদ্ধি এটা খারাপ না ভালো, তবে সমাজের সব জায়গায় এটা সঠিকভাবে বণ্টন হচ্ছে কিনা সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। 

এদিকে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সার্বিকভাবে ২০২২ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ২০২১ অর্থবছরের থেকে অনেক ভালো ছিল। হয়তো প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, তবে এত মোটা অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অন্যান্য সূচকের ভিত্তিতে হচ্ছে বলে মনে হয় না। প্রকৃত চিত্র পেতে হলে, মাথাপিছু আয় এবং প্রবৃদ্ধির হিসাবে আনতে হবে স্বচ্ছতা। 

সরকার ও জনগণের স্বার্থেই, মাথাপিছু আয় আর জিডিপির হিসাব যথাসময়ে হালনাগাদ করতে বিবিএসকে তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।