অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য সুখবর

দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই প্রায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এ ছাড়া আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদায়ী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (০৯ আগস্ট) থেকে অন্তঃসত্ত্বা ও দুগ্ধদানকারী নারীরা টিকা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রোববার (৮ আগস্ট) রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও কোডিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। সবার মতো অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারীদের মধ্যেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার টিকাবিষয়ক জাতীয় কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারীদের কোভিড-১৯ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের পূর্বে করণীয়-
১. সাধারণ নির্দেশনাবলি
– অন্তঃসত্ত্বা নারীকে সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল/অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নকরণপূর্বক শুধু হাসপাতালবিশিষ্ট সরকারি টিকাদান কেন্দ্রে কোভিড-১৯ টিকা প্রদান করতে হবে।

– টিকা প্রদানের পূর্বে টিকাকেন্দ্রের রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক কাউন্সেলিং সম্পন্নসাপেক্ষে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে টিকা প্রদান করতে হবে।
২. শর্তাবলি
– অন্তঃসত্ত্বা নারী টিকা গ্রহণের দিন অসুস্থ থাকলে তাকে কোভিড-১৯ টিকা প্রদান করা যাবে না।
– অনিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীকে কোডিড-১৯ টিকা প্রদান করা যাবে না।
– কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারীর ভ্যাকসিন অ্যালার্জির পূর্ব ইতিহাস থাকলে তাকে কোডিড-১৯ টিকা প্রদান করা যাবে না।
– কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী যদি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের পর এইএফআই কেস হিসেবে শনাক্ত হন। তবে তাকে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা যাবে না।
– সম্মতিপত্রে টিকাগ্রহীতা/আইনানুগ অভিভাবক ও কাউন্সেলিং চিকিৎসকের স্বাক্ষর ছাড়া টিকা প্রদান করা যাবে না।
৩. কাউন্সেলিং
কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণে ইচ্ছুক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে টিকা প্রদানের পূর্বে অবশ্যই নিম্নোক্ত তথ্যাদি একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অবহিত করতে হবে। সেগুলো হলো –
অন্তঃসত্ত্বা নারীদের গর্ভাবস্থায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিতকরণ
– নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান জন্মদান (অপরিণত নবজাতক) এর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
– নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
– বয়স্ক অন্তঃসত্ত্বা (> ৩৫ বছর), উচ্চ বিএমআই সম্পন্ন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত নারী গর্ভাবস্থায় (বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার) কোডিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে তা মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
– সাধারণ নারীদের তুলনায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা অনেক বেশি।
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে কোভিড-১৯ টিকার সুফল সম্পর্কে অবহিতকরণ
– টিকা গ্রহণ করলে কোডিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া ও এর ফলে সৃষ্ট জটিলতার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম।
– গর্ভাবস্থায় কোডিড-১৯ টিকা গ্রহণ করলে কোভিড-১৯ এর গর্ভজনিত ঝুঁকিসমূহের সম্ভাবনা কম।