গাজীপুরের ট্রেন দুর্ঘটনায় বাতিল হয়েছে একটি ট্রেনের যাত্রা। ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে আরও ৫টি ট্রেন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন অন্তত সাড়ে ৬ হাজার যাত্রী।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টারে ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। যাত্রা বাতিল হওয়ায় টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা ফেরত নেন কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটের ট্রেন বাতিল করা হয় বিকাল ৫টায়। ৭ ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করেও যেতে না পারা যাত্রীদের টাকা ফেরত নিতেও পড়তে হয় দীর্ঘ লাইনের ভোগান্তিতে।
একইভাবে বিকেল সাড়ে ৩টার সিলেটের ট্রেন কালনি এক্সপ্রস ও সাড়ে ৪টার চট্টগ্রামের সূবর্ণ এক্সপ্রেসের যাত্রীরাও পড়েছেন শিডিউল বিপর্যয়ের খপ্পরে। ৫/৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ট্রেন ছাড়বে কখন তা নির্দিষ্ট করে বলতে না পারায় যাত্রীরা ভুগছেন অনিশ্চয়তায়।
একইভাবে যাত্রা অনিশ্চয়তায় প্লাটফর্মে অপেক্ষা করতে হয়েছে এগার সিন্ধু, উপবন ও মহানগর এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। সারা দিনে সব মিলিয়ে ৬ ট্রেনের অন্তত সাড়ে ছয় হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন।
প্রায়ই মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনায় বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান যাত্রীরা।
এদিকে, আট ঘণ্টা পর গাজীপুরে লাইনচ্যুত মালবাহী ট্রেন উদ্ধার হয়েছে। রেললাইন মেরামত শেষে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। টঙ্গী জংশন থেকে বগি উদ্ধারের পর সুবর্ণ এক্সপ্রেস যাত্রার মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সন্ধ্যা ৫টা ৫৫ মিনিটে টঙ্গী জংশন ছেড়ে যায় সুবর্ণ এক্সপ্রেস।
এর আগে সকালে টঙ্গী স্টেশনে প্রবেশের সময় বিকট শব্দে তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটির মাঝখানের একটি বগি উল্টে দূরে পড়ে যায়। আর দুটি বগি লাইনের ওপর আছড়ে পড়ে। এর তিন ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে পরপর বগিগুলো লাইন থেকে সরিয়ে নেয়।
ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাদিকুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
টঙ্গী স্টেশনে চারটি লাইন রয়েছে। চার ও তিন নম্বর লাইন ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দুর্ঘটনায়। পুরোপুরি লাইনগুলো সচল হতে আরও কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।