পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় বিচারকার্যের ষষ্ঠ দফার শেষ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী সপ্তম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ ১৫, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে আদালতের কার্যক্রম। এ সময় সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ৭ ঘণ্টা কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহকে জেরা করেন ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের আইনজীবীরা। রাজিব হোসেনসহ আলোচিত এ হত্যা মামলার কয়েকজন আসামির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন তামান্না ফারাহ। এছাড়াও শেষ দিনে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন অপর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন। তবে সময় স্বল্পতার কারণে এ বিচারককে আসামিপক্ষের জেরা বাকি রয়েছে। সিনহা হত্যার অন্যতম আসামি আবদুল্লাহ আল মামুন, এসআই শাহজাহান আলী এবং ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর ১৬৪ ধারার জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণে ষষ্ঠ দফার শেষদিনে দুইজন বিচারকসহ ৬ জন সাক্ষীর হাজিরা দেয়া হয়েছিল। তার মধ্যে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এবং অপর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ সময় এ দুই বিচারক আসামিদের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে উপস্থাপন করে। তিনি বলেন, এ দিন বিচারক তামান্না ফারাহকে সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা সাত ঘণ্টা জেরা করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। এ কারণে অপর ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোসেন জেরা এবং হাজিরা দেওয়া অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করা যায়নি। আগামী ১৫, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানান পিপি। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মাঝে এ পর্যন্ত ৫৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পর গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আলোচিত এ মামলায় গত বছর ১৩ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হয়।