শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রামের জনপদ, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি: হাসপাতালে ভিড়, ঝুঁকিতে ফসল

শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রামের জনপদ, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি: হাসপাতালে ভিড়, ঝুঁকিতে ফসল
শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রামের জনপদ; ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষের।

তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। এদিকে ঘন কুয়াশায় ফসল নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দিন ও রাতের তাপমাত্রা একরকম থাকায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শাহীনুর রহমান সরদার বলেন, মঙ্গলবার হাসপাতালে ৩৪০ রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩৫ জন, শিশু ওয়ার্ডে ৭৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ২২৮ জন রয়েছে। শিশু ও বয়স্করা ঠাণ্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

তাপমাত্রা নেমে গেলেও চলতি মাসে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শীতজনিত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম শহরের খলিলগঞ্জ বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী প্রিন্স জানান, শীতজনিত কারণে ডায়েরিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও সর্দির প্রকোপ বেড়েছে। এখন এসব রোগের ওষুধও বেশি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ঘন কুয়াশায় ফসল ঝুঁকিতে পড়েছে। উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রঘুরায় গ্রামের কৃষক বদিয়ত ও মোস্তাফিজার জানান, কুয়াশার কারণে বীজতলায় পানি বেড়েছে। পানি সরাতে না পারায় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এদিকে প্রচণ্ড কুয়াশা আর কনকনে হাওয়ার কারণে চরম ভোগান্তিতে পরেছে খেটে খাওয়া মানুষ। সংসার চালানোর তাদিগে তারা বাইরে বের হলেও কাজ পাচ্ছেন না। গরম কাপড় না থাকায় তীব্র ঠাণ্ডা সহ্য করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি বাজারের অটোরিকশা চালক ছামসুল বলেন,“বাহে গাড়ি চালা কঠিন হয়া দাঁড়াইছে। শীতোত হাত-পা কোকড়া নাগি গেইছে, নাকে মুখ টনটন করে।”

দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রঘুরায় গ্রামে ছামাদ বলেন, “গ্রামোত কাঁইয়ো কম্বল দিবের আসে না। হামরা একবারো একটা কম্বল পাইলং না।”

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, “শীতার্ত মানুষের সহায়তায় সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে আমরা আরও ২৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি। দরিদ্র মানুষের যদি খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা লাগে সেগুলো আমরা দিয়ে দিচ্ছি।