রাজশাহীতে হোটেলকক্ষ ছিদ্র করে গোপনে ভিডিও ধারণ, টাকা দাবি

রাজশাহীতে হোটেলকক্ষ ছিদ্র করে গোপনে ভিডিও ধারণ, টাকা দাবি

রাজশাহীতে হোটেলকক্ষের দরজায় ছিদ্র করে গোপনে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ তাদের আদালতে নিয়ে যায়। এরপর আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।

ওই দুই আসামি হলেন রাজশাহী নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকার ‘নিউ পপুলার-২’ নামের হোটেল ব্যবস্থাপক শরীফুল ইসলাম (২৮) এবং এহোটেল বয় আব্দুল নূর (১৯)। শরিফ উদ্দিনের বাড়ি নওগাঁর পোরশা উপজেলায়। আর আব্দুল নূরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়।

এ মামলায় পলাতক আরও তিনজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে জানিয়ে নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান। তিনি জানান, তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মুঠোফোনে মামলার আলামত হিসেবে গোপনে ধারণ করা ভিডিও পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গোপনে ভিডিও করার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। এ কারণে তাদের রিমান্ড চাওয়া হয়নি।

পুলিশ জানায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তার স্ত্রীকে নিয়ে গত রোববার রাতে ওই হোটেলে ওঠেন। তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা হোটেলে ওঠার কিছুক্ষণ পরই শরিফ ও নূর গিয়ে দরজায় কড়া নাড়েন। দাবি করেন অতিরিক্ত টাকা। জানান, হোটেল কক্ষের ভেতরের দৃশ্য তাদের ভিডিও করা হয়েছে। এখন টাকা না দিলে ভিডিও ফাঁস করা হবে। ওই রাতেই দুই শিক্ষার্থী হোটেল থেকে পালিয়ে যান।

কিন্তু পরদিন সোমবার শরিফ ও নূর তাদের দফায় দফায় ফোন করে লাখ টাকা দাবি করেন। এক পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা দিলে ভিডিও প্রকাশ করা হবে না বলে তাদের জানানো হয়। বাধ্য হয়ে ওই দম্পতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে জানান। তিনি ওই হোটেলে গিয়ে নূর ও শরিফের ফোন তল্লাশি করে ভিডিওচিত্র পান।

ছাত্রলীগের ওই নেতা জানান, তাদের কাছে শুধু যে এই শিক্ষার্থী দম্পতির ভিডিও আছে তা নয়। আরও অনেক সাধারণ মানুষের ভিডিও করে রেখেছে শরিফ ও নূর। তাদের ফোন তল্লাশি করে দেখা গেছে, এসব ভিডিওচিত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আরও অনেককে পাঠানো হয়েছে। তাই বিষয়টি রাতেই পুলিশকে জানানো হয়। পরে রাজপাড়া থানা-পুলিশের একটি দল হোটেল থেকে দুজনকে ধরে নিয়ে যায়।

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হোটেলের মালিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া আরও কতজনের সঙ্গে এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা ঘটেছে তা পুলিশ তদন্ত করছে বলেও জানান ওসি।