দেশে নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার

দেশে নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার

দেশে চরম গ্যাস–সংকটের মধ্যে সুখবর নিয়ে এল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। দেশে নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস অনুসন্ধান সংস্থাটি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আজ সোমবার নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।

নিজ বাসভবনে নসরুল হামিদ বলেন, ভোলার ইলিশা-১ কূপটি দেশের নতুন গ্যাসক্ষেত্র (২৯তম)। এটি ভোলা জেলার তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্র। সেখানকার অন্য দুটি হলো শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্র।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদছবি: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন গ্যাসক্ষেত্রটিতে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই গ্যাসের বাজারমূল্য ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর যদি আমদানি করা এলএনজির দর বিবেচনা করা হয়, তাহলে মূল্য দাঁড়াবে ২৬ হাজার কোটি টাকা।

নসরুল হামিদ বলেন, এটা খুবই আনন্দের সংবাদ, সৌভাগ্যের বিষয়। ভোলায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩ টিসিএফ গ্যাস মজুত আশা করা হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীর ঠিক ওপরের দিকে নতুন গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কার করা হয়েছে। ২৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত এখান থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে।

নসরুল হামিদ বলেন, ভোলায় একটি প্রসেস প্ল্যান্ট রয়েছে। আরও একটি আনার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে পাইপলাইনে গ্যাস দেওয়া সম্ভব হবে। একটি পাইপলাইন ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা যাবে। প্রি-ফিজিবিলিটি শেষ, এখন ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ চলছে।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম বাপেক্সের হয়ে কূপটি খনন করে। গত মার্চে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় খননকাজ শুরু হয়। ৩ হাজার ৪৭৫ মিটার গভীর পর্যন্ত খননকাজ শেষ হয় গত ১৪ এপ্রিল। এই কূপের তিন স্তরে ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুত আছে বলে ধারণা করছে বাপেক্স।

বাপেক্স জানিয়েছে, নিকটবর্তী গ্যাসক্ষেত্র ভোলা নর্থ থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ইলিশা-১ কূপটির অবস্থান। এখানে পাওয়া গ্যাসের স্তরের সঙ্গে ভোলা নর্থের কাঠামোগত কোনো সংযোগ নেই। ভূগর্ভের একটি ফাটলের মাধ্যমে একটি ক্ষেত্র থেকে অপরটি বিচ্ছিন্ন। তাই ইলিশা একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্র।

১৯৯৫ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে বাপেক্স। একই সংস্থা ২০১৮ সালে আবিষ্কার করে ভোলার দ্বিতীয় গ্যাসক্ষেত্র—ভোলা নর্থ। শাহবাজপুর থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয় ২০০৯ সালে। আর ভোলা নর্থ থেকে এখনো উৎপাদন শুরু হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.