দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে চরমোনাই পিরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শুক্রবারের এই সমাবেশ থেকে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।যুগান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন দলের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, জাতীয় সরকার গঠন ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবিতে তার দল আন্দোলনের মাঠেও থাকবে।
সাম্প্রতিক সময়ে সিটি করপোরেশনসহ প্রায় সব নির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসে ইসলামী আন্দোলন। ঢাকার ২ সিটিতে ২ জনসহ দেশের বিভিন্ন পৌরসভায় ৫ কাউন্সিলর এবং ১৩ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন তাদের প্রার্থীরা। অন্যান্য নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীর পরই দাঁড়ায় তাদের ভোটের অবস্থান।
গাজীপুরে ভোটের হিসাবে তৃতীয় হলেও ৪৫ হাজারের বেশি ভোট পায় হাতপাখা। সর্বশেষ খুলনা ও বরিশাল সিটিতে নৌকার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয় ইসলামী আন্দোলন। বিএনপি নির্বাচন বর্জনের পর এভাবে নিজেদের ভোটের মাঠে ২য় শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে দলটি। নৌকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবহ তৈরির মাধ্যমে গ্রহণযোগ্যও করতে থাকে বর্তমান সরকারের সব নির্বাচন।
বক্তৃতা-বিবৃতিতে সরকারের বিরুদ্ধে কিছু না বলা আর বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনে না গিয়ে আওয়ামীঘেঁষা বলেও পরিচিতি পায় দলটি। কিছুদিন আগে বরিশালে এক জনসভায় ইসলামী আন্দোলনকে আওয়ামী লীগের বি-টিম বলে ঘোষণা দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর। ঢাকায় হেফাজতের ওপর হামলা, মামুনুল হক ও রফিকুল ইসলাম মাদানী গ্রেফতারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। পরে অবশ্য ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
১২ জুনের সিটি নির্বাচনে বরিশালে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দলের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম। কর্মী-সমর্থকদের কাছে যার পরিচয় শায়েখে চরমোনাই নামে। প্রায় ৩৪ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হলেও ভোটের দিন ঘটে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা। নগরের কাউনিয়া ও চৌমাথা এলাকায় দুই দফা হামলা হয় ফয়জুলের ওপর। দ্বিতীয় দফা হামলায় রক্তাক্ত হন তিনি। এরপরই মূলত পালটে যায় দৃশ্যপট। বর্তমান সরকারের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনের ঘোষণা দেন ফয়জুল। আওয়ামী লীগকে জালেম আখ্যা দিয়ে পতন না হওয়া পর্যন্ত শরীরের শেষ রক্তবিন্দু ঢেলে মাঠে থাকার ঘোষণা দেন তিনি। সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল ও খুলনার ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন দলের আমির চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। একই সঙ্গে সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচনে থাকা মেয়রপ্রার্থীদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি। সরকারের পতন দাবিতে ইসলামী আন্দোলন মাঠে নামবে উল্লেখ করে রেজাউল করীম বলেন, ‘নায়েবে আমিরের ওপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ হবে। সেই বিক্ষোভ থেকে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করব আমরা।