চিকিৎসক বুলবুল হত্যা : আরেক আসামি গ্রেফতার

চিকিৎসক বুলবুল হত্যা : আরেক আসামি গ্রেফতার

রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়া এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল হত্যা মামলায় মো. রিপন (৩৪) নামের আরেক আসামিকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ মামলায় এ নিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতারা করা হলো।

ঝালকাঠির নলছিটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার (১৫ জুন) রিপনকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ  এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রিপন স্বীকার করেছেন, তিনিও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বুলবুলের উরুতে ছুরিকাঘাত করেন। ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন বলেন, এ হত্যা মামলায় আগে গ্রেফতার চার আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রিপনের নাম উঠে আসে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রিপনকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রিপন জানিয়েছেন, তিনি ছিনতাইকারী দলের প্রধান। চিকিৎসক বুলবুলের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিতে পাঁচজন মিলে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। রিপনও ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে আঘাত করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বুলবুলকে হত্যার পর রিপন ঝালকাঠির নলছিটিতে গ্রামের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন।

গত ২৭ মার্চ ভোরে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় ছিনতাইকারীদের হাতে দন্ত চিকিৎসক বুলবুলকে হত্যার ঘটনায় গত ৩০ মার্চ চারজনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- আরিয়ান ওরফে হাফিজুল ওরফে হৃদয় (৩৯), সোলায়মান (২৩), রায়হান ওরফে আপন ওরফে সোহেল (২৭) ও রাসেল হোসেন হাওলাদার (২৫)।

আদালতে দেওয়া ওই চার আসামির জবানবন্দি অনুযায়ী, তারা পাঁচজন গত ২৬ মার্চ দিনগত রাত ২টা থেকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশে ঘোরাঘুরি করছিলেন। চিকিৎসক বুলবুল রিকশায় করে পশ্চিম কাজীপাড়ার নাভানা ফার্নিচারের সামনে পৌঁছালে আসামিরা তার গতিরোধ করেন। এসময় দলনেতা রিপনসহ অন্যরা বুলবুলের কাছে যা আছে, তা দিয়ে দিতে বলেন। বুলবুল দিতে রাজি না হলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিলে বুলবুলকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করেন রিপন।

আহমেদ মাহী বুলবুল (৩৯) পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক এবং প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ব্যবসায়ী। তিনি গত ২৭ মার্চ ভোরে নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে রিকশায় করে শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড যাচ্ছিলেন। পথে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিতে গেলে ছিনতাইকারীরা তার উরুতে ছুরিকাঘাত করেন। পরে বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসের চালক ও হেলপারের সহযোগিতায় বুলবুলকে প্রথমে স্থানীয় আল হেলাল হাসপাতাল ও পরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহত বুলবুলের স্ত্রী শাম্মী আক্তার শান্তি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন।