ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলার সতর্কতা জারি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (০১ মার্চ) সন্ধ্যায় কিয়েভের বাসিন্দাদের উদ্দেশে এ সতর্কতা জারি করা হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রযুক্তিগত কেন্দ্র এবং কিয়েভের ৭২তম প্রধান সাইঅপস কেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘আমরা ইউক্রেনের নাগরিক, যাদের জাতীয়তাবাদীরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে উস্কানির জন্য ব্যবহার করছে তাদের এবং একইসঙ্গে রিলে স্টেশনের কাছাকাছি বসবাসকারী কিয়েভের বাসিন্দাদের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার অনুরোধ করছি।এর আগে কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাজধানীর উপকণ্ঠে শত্রুরা অবস্থান করছে। কিয়েভকে রক্ষায় প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, স্থল প্রতিরক্ষা বাহিনী ঐতিহাসিকভাবেই আমাদের ভূখণ্ডের জন্য লড়াই করে আসছেন।
কিয়েভের মেয়র আরও বলেন, শহরের প্রবেশপথগুলোতে দুর্গ ও তল্লাশিচৌকি স্থাপন করা হয়েছে। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রয়োজন না-হলে ঘরের বাইরে বের হবেন না। আশ্রয়কেন্দ্রেও চলে যেতে পারেন। রুশ সাঁজোয়া যান, ট্যাংক ও কামানের চল্লিশ মাইল সামরিক বহর নিয়ে কিয়েভের উপকণ্ঠে অবস্থান করছে রুশ বাহিনী। এদিকে কিয়েভের বাসিন্দাদের হুঁশিয়ারি করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজধানীর লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার বিকালে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা সেবা ও ৭২তম প্রধান সাইঅপস কেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এতে ইউক্রেনের নাগরিকদের এসব জায়গা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তথ্য-হামলা বন্ধেও অভিযান চলছে। যদিও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণাকে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই বলে আখ্যায়িত করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) সুইডেনের স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যালোলিনা লিন্ডহোম বিলিং নামের ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি, ইউক্রেনে অভ্যন্তরীণভাবে ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বর্তমানে তারা ট্রেন, বাস ও গাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া ছয় লাখ ৬০ হাজার মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এমন দাবি করেছে। এদিকে শহরের পাতাল রেলেও মানুষের ভিড়। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আর বোমা থেকে বাঁচতে তারা সেখানে জড়ো হয়েছেন। এরপরেই নেমে এসেছে শীত। গত দুসপ্তাহে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ওঠানামা করছে। এর মধ্যেই লাখ লাখ মানুষ নিজ ভূখণ্ড ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন।