এ বছর দেশের হজযাত্রীদের সর্বোচ্চ খরচ গুনতে হচ্ছে। জনপ্রতি খরচ হবে প্রায় সাত লাখ টাকা। এর মধ্যে বিমান ভাড়াই প্রায় দুই লাখ। হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাব বলছে, বিমান ভাড়া বৃদ্ধি হজযাত্রীদের জন্য জুলুম হয়েছে। আর ধর্মপ্রতিমন্ত্রী জানান, খরচ কমানোর কোনো সুযোগ নেই। প্রায় প্রতিবছর একটু একটু করে বাড়ে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রার খরচ। এবার তা এক লাফে বেড়েছে দেড় লাখ টাকার বেশি। এ বছর সরকারি-বেসরকারিতে হজযাত্রায় খরচ প্রায় ৭ লাখ টাকা।
জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেখান থেকে হজযাত্রায় খরচ মাত্র ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৩ টাকা। এতেও সরকারিভাবে মেলে ভর্তুকি। ভারতে হজ প্যাকেজ ৩ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি মুদ্রায় পৌনে ৪ লাখ টাকা। আর পাকিস্তানে সাড়ে ৪ লাখ টাকার মতো। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দাবি, গত বছরের তুলনায় বিমান ভাড়া বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা এবং মিনা ও আরাফাতে মুয়াল্লিম ফি বেড়েছে এক লাখ টাকা।
ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, রিয়ালের মূল্য ২০-২২ টাকা করে ছিল গত বছর হজের সময়। এবার হয়ে গেছে সাড়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকার মতো। এখানে ৬৩ হাজার টাকা তো এমনিতেই পার্থক্য। এখানে তো কমানো বাড়ানোর বিষয় নয়। অতএব এ জায়গা ধরা কোনো বিষয় না। আর আমাদের মোয়াল্লেম ফি টাই সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। যেটা সৌদি ১ লাখ টাকা বাড়িয়েছে তারা। হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) জানায়, হজ প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো অস্বাভাবিক বিমান ভাড়া ও ডলারের পাশাপাশি সৌদি রিয়েলের দাম বৃদ্ধি।
হাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী বলেন, সবচেয়ে বেশি যেটা দৃষ্টিতে পড়ে সেটা হলো বিমানের ভাড়া। যেটা বিমান বাংলাদেশ নির্ধারণ করে। আর সৌদি আরবের হজ চুক্তি মোতাবেক অর্ধেক সৌদি আরবস্থ এয়ারলাইন্সগুলো নেয়। আর বাংলাদেশের বিমানের ৫০ ভাগ নেয়।
ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, বিমান ভাড়াটা খুব যে বেশি বেড়েছে তা না। এটা সামান্য কিছু বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের বেড়েছে কতটুকু। এই জিনিসটা আপনাদেরকে ভাবতে হবে।
হাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল বাহার বলেন, সারা বছর বিমান লোকসান দিবে আর হাজিদেরকে দিয়ে এটা পুষিয়ে নেয়া হবে, ডাবল দাম নেয়া হবে এটা একদম অযৌক্তিক, এটা হাজিদের প্রতি খুবই অবিচার। এদিকে, ডলারের এই সংকটকালে এবার প্রায় ৭৩ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে।
ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেন, আমাদের কোনও সংকট হবে না ইনশাআল্লাহ। আমাদের সে ব্যবস্থা করা আছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টা নিয়ে সজাগ। এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজ করতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। তবে, কোটা পূর্ণ না হওয়ায় দুই দফা বাড়ানো হয় নিবন্ধনের সময়।